মহেশপুরে এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনো মেশিন, প্যাথলজি লোকবল ও চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত !
মোঃ জাহিদুর রহমান তারিকঃ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের সেবা দিচ্ছেন মাত্র ৪ জন চিকিৎসক। চিকিৎসকের পদ খালী আছে ৩২টি।
দুর দুরন্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে স্থানীয় ক্লিনিক,প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছে। সেই
সাথে হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত ওষুধ। আল্ট্রাসনো মেশিন, এক্সরে মেশিন থাকলেও তা অকেজো পড়ে আছে বহুদিন। ল্যাব থাকলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে আসন সংখ্যা ৫০টি। এই আসনের বিপরিতে ৯জন
কনসালটেন্ট ও ২১জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা। অথচ রয়েছে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক। চিকিৎসক এখানে পোষ্টিং দিলেই নানা অজুহাতে তারা এখান থেকে বদলি হয়ে চলে যান। গত ১ বছর ধরে এভাবেই চলছে হাসপাতালটির বেহাল দশা।
বর্হিবিভাগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আর এদের সেবা দিচ্ছেন বিভিন্ন কমনিউটি ক্লিনিকের
মেডিকেল এসিসটেন্টরা। হাসপাতালের ৪ জন চিকিৎসক (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) ডা: নাছির ্ধসঢ়;উদ্দিন, ডা: মেফতা, ডা: মাহবুবুল আলম ও ডা: আলী আশরাফ শিফট করে ডিউটি করছেন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবত এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন অকেজো অবস্থায় রয়েছে। যা সারানোর কোন উদ্যোগ নেয়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কতৃপক্ষ। এছাড়াও হাসপাতালে প্যাথলজি থাকলেও কোন কর্মী না থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা বাধ্য হয়ে হাসপাতালে আশে পাশে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিক অথবা প্রাইভেট হাসপাতালে, ডায়াগস্টিককে পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে রোগীরা নানা হয়রানি ও বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। ভূক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ হাসপাতাল থেকে ডাক্তাররা ওষুধ লিখলেও হাসপাতালে তা পাওয়া যায় না। বাইরের ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত দামে ঔষধ গুলো ক্রয় করতে হচ্ছে।
মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: নাসির উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন যাবত হাসপাতালের এ সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে বার বার সংশ্লিস্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে। অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসক দেওয়া সত্যিই অবসম্ভব। তার পরেও তারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের যতটুকু সম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবাবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: প্রফুল্ল কুমার জানান, চিকিৎসক সংকটের কারনে মহেশপুরে রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন দুজন ডাক্তার জরুরী বিভাগ ও বহি:বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
চিকিৎসক সংকটের কারনে বিভিন্ন ইউনিয়নের সাব-সেন্টার থেকে মেডিকেল এসিসটেন্ট নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া
হচ্ছে। তিনি জানান, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন
চিকিৎসক এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনো মেশিন ও প্যাথলজি বিষয়ে তিনি জানান, এই পদে লোকসংকট রয়েছে এবং এগুলো নষ্ট হয়ে গেছে যার কারনে রোগীদের এই সেবা দিতে পারছি না।