সব

নেত্রকোনার একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Thursday 18th May 2017at 7:40 pm
57 Views

1

স্টাফ রিপোর্টারঃ “আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নেত্রকোনার একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেক মানুষের থাকার ব্যবস্থা করে দিবো’ নেত্রকোনায় হাওরে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের এই রকমই আশ্বাস দেন সফররত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

হাওর পরিদর্শনে গিয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ী উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হাওর আমাদের মূল্যবান সম্পদ। হাওরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হাওরের প্রাকৃতিক অবস্থা বিবেচনা করে উন্নয়ন-অবকাঠামোসহ সব ধরনের কাজ করতে হবে। হাওরের একমাত্র ফসলের জন্য নদ-নদী, খাল-বিল ও ভরাট হওয়া হাওর খনন করতে হবে।’

সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালিয়াজুরী উপজেলা কলেজ মাঠে কৃষকদের মধ্যে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তা তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে খালিয়াজুরীতে পৌঁছেন। এরপর তিনি প্রায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাওরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হাওরে বাঁধ তৈরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারি ব্যাংক কৃষকের ঋণের সুদ অর্ধেক মওকুফ করেছে। স্থগিত করেছে কৃষিঋণ আদায়। আমি শুনেছি, এনজিওরা হাওরের দুর্গত কৃষকদের ঋণ আদায়ে চাপ দিচ্ছে।’

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছ থেকে ঋণ আদায় স্থগিত করার জন্য এনজিও ব্যুরোকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ফসলের জন্য বিনামূল্যে সার, বীজ ও কৃষি উপকরণ দেওয়া হবে। অব্যাহত রাখা হবে অন্যান্য কৃষি ভর্তুকি।’ এ সময় প্রতিটি ইউনিয়নে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি (ওএমএস) সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিলেন। আমিও ১৯৭৫ সালের এক রাতে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি। এখন আপনাদের মুখে হাসি ফোটানোর কাজ করছি।’

কৃষকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আপনাদের গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করব। আমি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দিয়েছি। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, একটি এলাকার ফসল নষ্ট হলেও খাদ্যে ঘাটতি হবে না। সাহস নিয়ে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। বর্তমান সরকার সব সময় এ অঞ্চলের মানুষের পাশে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আপনারা নিশ্চিত থাকবেন, দুর্নীতি প্রমাণ হলে কেউই রেহাই পাবে না। শাস্তি পেতেই হবে।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, দুর্যোগের সময় যাঁরা জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নিতে হয়, তা জানা আছে। সুতরাং কেউ মজুদদারি করে দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়ে পার পাবেন না।’

পরে প্রধানমন্ত্রী ৭০ জন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল ও ১০০০ টাকা করে অনুদান দিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ত্রাণ বিতরণ শেষে প্রধানমন্ত্রী বল্লভপুর গ্রামে গিয়ে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, নেত্রকোনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান খসরু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, যুব ও মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের পংকজ দেবনাথ, আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম লিটন ও সফি আহম্মেদ।

 


সর্বশেষ খবর