সব

ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আজ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Sunday 17th December 2017at 6:00 pm
121 Views

স্টাফ রিপোর্টারঃ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং সম্প্রতি যোগ হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের সাধারণ নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজ।

রবিবার নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত জানানোর কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে কমিশন সচিব বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আইনি কোনো জটিলতা নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করার সঙ্গে-সঙ্গে নির্বাচন করার জন্য একটি পত্র কমিশনকে দেয়া হয়েছে। কমিশন সভায় এ নিয়ে আলোচনা হবে। কমিশনাররা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।’

ইসি সূত্র জানায়, ডিএনসিসির মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং এ দুই সিটির বর্ধিত ৩৬টি ওয়ার্ডে ভোট করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুরোধে ছয়টি বিষয় বৈঠকে পর্যালোচনা করবে ইসি। এগুলো হচ্ছে মেয়রের শূন্য পদে উপ-নির্বাচনের বর্তমানের এখতিয়ারাধীন এলাকা, সীমানা ও ওয়ার্ড, শূন্য পদে উপ-নির্বাচনের জন্য ওয়ার্ড বিভক্তি ও ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস, বিভক্তিকৃত ওয়ার্ড ও পুনর্বিন্যস্ত ভোটার তালিকার সিডি প্রাপ্তির সর্বশেষ অবস্থা, উপ-নির্বাচনের প্রাক্কালে হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও নিষ্পত্তি বিষয়ক কার্যক্রমে প্রভাব, দুই সিটির সীমানা বাড়ানোর পর ওয়ার্ড সংখ্যা বৃদ্ধি ও ওয়ার্ড চূড়ান্ত করার পর পরিষদের পূর্বের সদস্য ও বর্তমান সদস্য সংখ্যা এবং পরিষদ গঠনবিষয়ক ধারা ৫(৩) এর বিধান পর্যালোচনা এবং দুই সিটিতে সীমানা ও ওয়ার্ড বাড়ায় পরিষদের বা বর্ধিতাংশের কাউন্সিলর পদের মেয়াদ বা নির্বাচনের বিষয় কোনো জটিলতা অথবা আইনি দিক পরীক্ষা করা।

মেয়রের সঙ্গে যেসব কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন তারা বাকি মেয়াদের অংশটুকুর জন্য নির্বাচিত হবেন অর্থাৎ কাউন্সিলররা বাকি আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন বলে ইসি সূত্র জানায়।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা থেকে শপথ নেয়া জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ থাকে ৫ বছর। ওই নির্বাচনের বিজয়ী প্রার্থীর মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের এপ্রিলে। মেয়র পদে নতুন যিনি আসবেন তিনি মেয়াদের বাকি অংশটুকু দায়িত্ব পালন করবেন।

৩০ নভেম্বর ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক মারা যাওয়ার পর ১ ডিসেম্বর মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সেক্ষেত্রে ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশনকে এ উপ-নির্বাচন করতে হবে।

কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের ধারণা, এই নির্বাচনের আয়োজন করা নিয়ে আইনগত কোনো জটিলতা নেই। বরং যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এ মাসেই অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এর পরও কোনো জটিলতা দেখা দিলে তা নিরসনের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, রোববার কমিশন সভায় এ নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট হবে। সভায় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণেরও সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের কোনো একটি দিন নির্ধারণ করা হতে পারে। এ নির্বাচনের জন্য ইসি সচিবালয় এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচিও বিবেচনায় নেবে। আগামী ১ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসাবে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে পরীক্ষা শেষ হবে।

ইসি সূত্র বলছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নুরুল হুদা একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে যোগ দিতে গত মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে সোমবার এ বিষয়ে সভার কার্যপত্র প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়ে যান। সিইসির ওই নির্দেশ অনুসারে এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে রবিবারের সভার কার্যপত্র।

এতে ডিএনসিসি নির্বাচনসংক্রান্ত বিধি-বিধানসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যুক্ত নতুন ওয়ার্ডগুলোর সীমানা এরই মধ্যে পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে। এসব ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার হালনাগাদের সব তথ্যও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র যাচাই, ভোটার তালিকা যাচাই প্রতিবেদন কমিশনকে দেওয়া হবে। এদিকে সিইসি শ্রীলঙ্কা থেকে গত শুক্রবার দেশে ফিরছেন।

আজকের সভার আলোচ্যসূচির বিষয়ে ইসির উপসচিব (সংস্থাপন) মো. শাহেদুন্নবী স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের শূন্য পদে নির্বাচন; সেই সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে নতুন গঠিত ওয়ার্ডগুলোয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা।

গত জুলাই মাসে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন করে যুক্ত হওয়া ১৬টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে ৩৬টি ওয়ার্ড গঠন করে সরকার। এ নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৯টি। এ বিষয়ে গত ২৬ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগ নতুন এসব ওয়ার্ড গঠনের গেজেট জারি করে। এতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পুরনো ৩৬টির সঙ্গে নতুন করে ১৮টি ওয়ার্ড যোগ হওয়ায় ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪টি। আর দক্ষিণ সিটির ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫টি।

ওয়ার্ড গঠনের আগে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) গত ৯ মে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নতুন করে মোট ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাঁতারকুল, বেরাইদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ৩৭ থেকে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে ডিএনসিসির মেয়র পদ শূন্য হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর থেকে। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ৪ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনের ১৫ (ঙ) ধারা অনুসারে সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের আগে মেয়র বা কাউন্সিলরের পদ শূন্য হলে শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেই হিসাবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় রয়েছে মেয়রের শূন্য পদে উপনির্বাচনের। ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে হলে এ মাসে অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই ইসিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু তাতে এবারের হালনাগাদে যারা নতুন ভোটার হতে যাচ্ছে তারা ওই নির্বাচনে প্রার্থী হতে বা ভোট দিতে পারবে না। কারণ হালনাগাদ ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি।


সর্বশেষ খবর