সব

ইউনূসের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী: অধ্যাপক মইনুল

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Sunday 6th March 2016at 12:16 pm
51 Views

47

স্টাফ রিপোর্টার ঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক অবসানের জন্য উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ ছিল বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগ সমর্থক অর্থনীতির এই শিক্ষক শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে বক্তব্যে এই দাবি করেন। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের কথায় ঘুরেফিরে আসে নোবেলজয়ী তাদের সাবেক সহকর্মীর কথা।

অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি মইনুল বলেন, “আপনারা অনেকে হয়ত জানেন না, প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটু সমঝোতার ব্যবস্থা করতে বললেন। আমি অনেকখানি এগিয়ে গেলাম।
“কিন্তু আবার কী ঘটল জানি না, উল্টে গেছে। তখন আমি নিজের এই ভূমিকাটা পরিত্যাগ করেছি।”

গ্রামীণ ব্যাংকের পদ হারানো ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের তহবিল আটকাতে তৎপরতার কথা বলছেন, তখন অধ্যাপক মইনুল ‘সমঝোতাচেষ্টা’র তথ্য প্রকাশ করলেন।

সমঝোতার উদ্যোগ কি আপনারাই নিয়েছিলেন, না কি আপনাদের নিতে বলা হয়েছিল- জানতে চাইলে অধ্যাপক মইনুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “না বললে উদ্যোগ নেব কেন?”
তবে এই বিষয়ে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক প্রামাণ্য চিত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থ এক তহবিল থেকে অন্য তহবিলে সরানোর অভিযোগ ওঠার পর বয়স পেরুনোর কারণ দেখিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের থেকে ২০১১ সালে ইউনূসকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে হেরে যান ইউনূস। তারপর থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের দ্বন্দ্ব চলছে। গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে সরকারকে হুঁশিয়ার করে ইউনূসের বক্তব্য যেমন এসেছে; তেমনি গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ইউনূসকে বাধা বলে আসছে সরকার।

এরমধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের কাছে ইউনূসের তদ্বিরের ই-মেইল ফাঁসের পর আওয়ামী লীগ নেতারা ওয়াশিংটনে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে নোবেলজয়ী বাংলাদেশির তৎপরতার অভিযোগ তোলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বলেন, ব্যাংকের পদ হারিয়ে এক ব্যাংক এমডি সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগের দিকে ইঙ্গিত করে সম্প্রতি শেখ হাসিনা বলেন, অসাংবিধানিকভাবে যেন দেশ চলে, তা চায় মহলবিশেষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষক ইউনূসের অনুপস্থিতির কারণও তুলে ধরেন সাবেক সহকর্মী মইনুল ইসলাম।

“এখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমার কান্না পাচ্ছে। প্রফেসর ইউনূসকে আমরা সাথে রাখতে পারিনি।
“বাংলাদেশের প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর একটা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছে যে সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান থেকে তিনি (ইউনূস) নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, যেন তাকে বিব্রত হতে না হয়।’’

ইউনূসের ‘অসম্মান পর্বের’ অবসান চেয়েছেন মইনুল।

অনুষ্ঠানে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহ্ম্মদ সিকান্দার খান সাবেক সহকর্মী ইউনূসের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর এক বক্তৃতায় বলেছেন- ‘নাথিং রং ওয়াজ ফাউন্ড ইন গ্রামীণ ব্যাংক একাউন্টস’।

“নরওয়ে সরকারের যারা এসেছিলেন তারাও বলেছেন ‘নাথিং রং ওয়াজ ডান ইন ট্রান্সফারিং মানি ফ্রম ওয়ান একাউন্ট টু এনাদার’। আমি সার্টিফাই করতে পারব যে ড. ইউনূস দেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করে নাই।”

 


সর্বশেষ খবর