গাফিলতির জন্য নিবন্ধন হয়নি ২৪ হাজার হজযাত্রীর
স্টাফ রিপোর্টারঃ শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন হলো না হজগমনেচ্ছু ২৩ হাজার ৫৭৩ জনের। সময়মতো পাসপোর্ট হাতে না পাওয়া, এ বছর হজে যাওয়ার ব্যাপারে অনীহা ও কয়েকটি এজেন্সির গাফিলতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
১ মার্চ থেকে শুরু করে কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে গতকাল রবিবার পর্যন্ত নিবন্ধনের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ধর্মমন্ত্রনালয়। তবে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ হাব নেতারা বলছেন, আসন্ন হজে বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন ব্যক্তি হজে যাওয়ার কোটা পূরণে প্রাক-নিবন্ধনের নির্দিষ্ট ক্রমিকের বাইরে থেকে আরো কিছু হজযাত্রী এ বছর হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এ জন্য পরবর্তীতে নিবন্ধনে আরো সময় বাড়ানো হতে পারে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নিবন্ধনের কোটা পূরণ না হওয়ায় নির্দিষ্ট সিরিয়ালে থাকা এই প্রায় ২৪ হাজার লোক আর এ বছর হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন না। পরবর্তী সিরিয়াল থেকে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ৯১৪ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৬ হাজার ৪২৭ জন নিবন্ধন করেছেন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট নিবন্ধন করেছেন এক লাখ ২ হাজার ৩৪১ জন নিবন্ধন করেছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ বছর হজের কোটা ৭,১৯৮ জনের। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের দেড়-দুই মাস পরও পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক হজগমনেচ্ছু। বিভিন্ন জেলায় হজযাত্রীদের নতুন পাসপোর্ট সরবরাহের জন্য গত ফেব্রুয়ারির তারিখ দিয়ে রসিদ দেওয়া হলেও অনেকেই সেসব পাসপোর্ট পাননি।
কোথাও কোথাও পাসপোর্ট তৈরির মেশিন বিকল হওয়ায় পাসপোর্ট সরবরাহে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। পাসপোর্টের অভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে হাব জানিয়েছে। এ কারণে ভুক্তভোগী হজযাত্রীরা হতাশায় ভুগছেন।
হাবের মহাসচিব মো. শাহাদাত হোসাইন তসলিম এই প্রসঙ্গে বলেন, প্রায় ২৪ হজযাত্রীর চূড়ান্ত নিবন্ধন না হওয়ায় তারা আর এ বছর হজে যেতে পারবেন না। তবে কোটা পূরণ না হওয়ায় গত বছরের অপেক্ষমান তালিকায় থাকা হজযাত্রীদের দিয়ে এই কোটা পূরণ করা হবে। পরবর্তী সিরিয়াল থেকে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
এদিকে জানা গেছে, কিছু সংখ্যক অসাধু হজ এজেন্সির অধিক মুনাফার লোভের বলি হয়েছেন বহু হজগমনেচ্ছু। তাদের গাফিলতির কারণে নিবন্ধন থেকে ছিটকে পড়েছেন তারা। এই হজ এজন্সিগুলো এখন রিপ্লেসমেন্টের নামে প্রাক-নিবন্ধনের নীচের সিরিয়াল থেকে লোক নেবে বেশি টাকার বিনিময়ে।
অবশ্য একটি এজন্সির মালিক স্বীকার করেছেন যে, তার মাধ্যমে হজে যেতে ইচ্ছুক ২৭ জনের মধ্যে ৭ জন পুরো টাকা পরিশোধ করায় তাদের নিবন্ধন করিয়ে দিয়েছেন। বাকিরা অর্ধেক বা দুই তৃতীয়াংশ টাকা দিয়েছেন। ফলে তাদের নিবন্ধন করেননি তিনি। অপর একজন এজেন্ট বলেন, হঠাত্ করে হজ প্যাকেজে প্রায় ৩০ হাজার টাকা বৃদ্ধির কারণে অনেকে এ বছর হজে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে চলতি বছর ২০ আগস্ট পবিত্র হজ ধরে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট শুরু করা হবে আগামী ১৪ জুলাই। এক মাসের বেশি সময় ধরে তা চলবে।