সব

নিজস্ব ভূখণ্ডের অধিকার ইসরাইলিদের রয়েছে : সৌদি যুবরাজ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 3rd April 2018at 2:53 pm
124 Views

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইসরাইলিদের নিজ ভূমির অধিকার আছে বলে জানিয়েছেন সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, নিজ ভূমিতে ইসরাইলিদের শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে।

সোমবার মার্কিন আটলান্টিক ম্যাগাজিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। এর মধ্য দিয়ে রিয়াদের সঙ্গে তেল আবিবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের আরেকটি নজির পাওয়া গেল।

যুবরাজ মোহাম্মদকে বলা হয়েছিল নিজেদের পিতৃপুরুষের ভূমিতে একটি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বসবাসের সুযোগ ইহুদিদের আছে বলে তিনি মনে করেন কিনা।

জবাবে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, নিজেদের ভূমির ওপর ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের পূর্ণ অধিকার আছে। আমাদের এখন একটি শান্তিচুক্তি দরকার। যাতে সব পক্ষই স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক একটি সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।

ইসলামের উৎপত্তিস্থল ও পবিত্র ভূমি সৌদি আরব ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে না। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের সময় আরব ভূখণ্ড দখল করে নেয়।

ওই ভূমি ফেরত দেয়ার ওপর ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক নির্ভর করবে- এমন নীতিই রিয়াদ এতদিন বজায় রেখে এসেছে। ফিলিস্তিনিরা ওই ভূমির দাবিদার।

গত মাসের শেষ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা সৌদি যুবরাজ বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার ও জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ ধর্মীয় কারণে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমরা শুধু এটুকুই বলতে চাই। অন্য কারও বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব খর্ব করতে সৌদি আরবের সঙ্গে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের একটি গোপন সখ্যতা গড়ে ওঠেছে।

গত বছরের নভেম্বরে ইসরাইলের জ্বালানিমন্ত্রী জুভাল স্টেইনিতজ এই গোপন সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন।

ইসরাইলের সেনাপ্রধান গাদি আইজেনকট সেই সময় বলেছিলেন, ইরানকে মোকাবেলায় তার দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়েও প্রস্তুত।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে অনেক বিষয়েই আমাদের আগ্রহের মিল আছে। আর শান্তি যদি থাকে, উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের অন্য সদস্য দেশগুলোও ইসরাইলের সঙ্গে অনেক বিষয়েই আগ্রহী হবে।

সৌদি আরব গত মাসে প্রথমবারের মতো তাদের আকাশপথ ইসরাইলগামী কমার্শিয়াল ফ্লাইটের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।

জাতিসংঘ ইইউ কাউকে মানছে না ইসরাইলৎ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কাউকেই তোয়াক্কা করছে না ইসরাইল। অবরুদ্ধ গাজায় ভূমি দিবসের বিক্ষোভে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় জাতিসংঘ ও ইইউ’র তদন্তের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি। ইসরাইল বলেছে, এ বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে না।

এদিকে ইসরাইলকে চাপে রাখতে আজ (মঙ্গলবার) জরুরি বৈঠক ডেকেছে আরব লীগ। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও মিডল ইস্ট আইয়ের। ভূমি দিবস উপলক্ষে টানা ছয় সপ্তাহের বিক্ষোভের প্রথমদিনে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন। আহত হন আরও দেড় হাজার। গত শুক্রবার (৩০ মার্চ) ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামে গাজার ইসরাইল সীমান্তের ছয়টি স্থানে এ বিক্ষোভ হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস ও ইইউ’র শীর্ষ কূটনীতিক ফেদরিকা মোঘেরিনি এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের দাবি জানান। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ইসরাইলের বামপন্থী দল মেরেৎজ পার্টি একই আহ্বান জানায়।ইসরাইলকে চাপে রাখতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসছে আরব লীগ। সৌদি আরবের নেতৃত্বে এ বৈঠক হবে।

ফিলিস্তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। রোববার ইসরাইলের সরকারি রেডিওতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগদোর লাইবারম্যান বলেন, এ বিষয়ে কোনো তদন্ত হবে না। তিনি বলেন, ‘নিজেদের অবস্থান থেকে সেনারা যা করার দরকার ছিল তাই করেছে। আমি মনে করি আমাদের সেনাদের প্রশংসা পাওয়া উচিত।’

আর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, ৭৫০ জনের বেশি মানুষ আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে হওয়া নিয়ে গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অতিরঞ্জিত।

ইসরাইল সেনাদের ঠিক কী নির্দেশনা দিয়েছিল তা জানায়নি। কিন্তু সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লার্নার বলেন, যে কেউ সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে তা অবশ্যই হুমকি।

মানুষ বেষ্টনীর কাছে এসে তা ভাঙার চেষ্টা করেছে। তারা অবকাঠামোর ক্ষতি করে গুলি করার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। গাজায় বিক্ষোভ দু’ভাগে বিভক্ত ছিল।

নারী ও শিশুরা ইসরাইলি সীমান্ত বেষ্টনী থেকে কয়েশ’ মিটার দূরে অবস্থান করে উৎসবমুখর পরিবেশে বিক্ষোভ করছিল। আর যুবকরা সীমান্ত বেষ্টনীর কাছে এসে সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ও জলন্ত পেট্রলের বোতল ছুড়ছিল।

১৯৪৮ সালে শরণার্থী হওয়া লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বরাবরই নিজিদের ভূমিতে ফেরার দাবি করে আসছে। কিন্তু তারা ফিরলে ইহুদিরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে আশঙ্কায় ইসরাইল সরকার তাদের ফিরতে বাধা দিচ্ছে।

১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ছয় ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী নিহত হয়। যে কারণে বিক্ষোভ শুরু করতে এ দিনটিকে বেছে নেয় ফিলিস্তিনিরা।


সর্বশেষ খবর