সব

জামিন পেলেন সালমান খান

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Saturday 7th April 2018at 7:01 pm
115 Views

আমারবাংলা ডেস্কঃ সালমান খানের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন যোধপুর সেশন কোর্টের বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশি। ৫০ হাজার রুপির ব্যক্তিগত বন্ডে তিনি এই বলিউড তারকাকে জামিন দিয়েছেন।

এরপর তাঁর আইনজীবীদের কাছ থেকে সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে, আদালতের নির্দেশসংক্রান্ত কাগজ কারাগারে পৌঁছার পর আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ছাড়া পাবেন সালমান খান। আর শিগগিরই এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তাঁর আইনজীবীরা। গত বৃহস্পতিবার আদালত থেকে তাঁর পাঁচ বছরের সাজা ঘোষণার পর এরই মধ্যে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। সেদিন আদালত থেকে তাঁকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে।

আজ মধ্যাহ্নভোজের পর এজলাসে এসে যখন বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশি বসেন, তখন ঘড়িতে বেলা দুইটা। আবার শুরু হয় সালমান খান আর বিষ্ণোই সমাজের আইনজীবীদের উত্তপ্ত শুনানি। আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই চলছে এ অবস্থা। মাঝে ছিল বিরতি। একপর্যায়ে সালমান খানের আইনজীবীরা এই বলিউড তারকাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করেন।

তাঁদের ধারণা, বিচারকের বদলি হওয়ায় জামিন মঞ্জুর বিলম্বিত হতে পারে। অপেক্ষা করতে হবে অন্তত আরও ২ দিন। আর এই সময়টা কারাগারে থাকতে হবে সালমান খানকে।

শুরুতে রবীন্দ্র কুমার যোশি জানান, মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর তিনি বেলা ২টায় সিদ্ধান্ত জানাবেন। কিন্তু শুনানি শেষ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত জানানো থেকে বিরত থাকেন। শুনানি শেষে তিনি জানান, বেলা ৩ টার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এদিকে আদালতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সালমান খানের জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। কিন্তু গতকাল শুক্রবার এই মামলার সংশ্লিষ্ট বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশি হঠাৎ বদলি হওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তখন জানা যায়, পরবর্তী বিচারকের দায়িত্ব বুঝে না নেওয়া পর্যন্ত সালমান খানের জামিন আবেদনের কোনো সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

কিন্তু আগের দিনের ঘোষণা অনুযায়ী সকালে এজলাসে বসেন বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশি। তাঁকে ৫১ পাতার জামিন আবেদনের নথি পড়ে শোনানো হয়। এরপর শুনানিতে অংশ নেন দুই পক্ষের আইনজীবীরা। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন- সালমান খানের দুই বোন আলভিরা ও অর্পিতা আর দেহরক্ষী শেরা। গতকাল যোধপুর সেশন কোর্টে সালমান খানের জামিনের আবেদন করা হয়।

এদিকে সালমান খানের মুক্তির জন্য মন্দিরে পূজা দিয়েছেন তাঁর ধাঁই মা রুক্মাণী বাই। তাঁর হাতেই ইন্দোর নার্সিং হোমে ১৯৬৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল সালমান খানের।

এরই মধ্যে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে পরপর দুই রাত থেকেছেন সালমান খান। সেখানে কুলার খাটিয়া ও চারটি কম্বল দেওয়া হয় তাঁকে। সালমান খান উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁর রক্তচাপ বেড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর রক্তচাপ কমানোর জন্য আদালতে সালমানকে ওষুধ খেতে দেখা যায়।

কারাগারে ঢোকার পর থেকেই তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। রাতে রুটি, ছোলার ডাল কিংবা বাঁধাকপির তরকারি দেওয়া হলেও কিছুই খাননি সালমান। গতকাল সকালেও চা, ডালিয়া কিংবা খিচুড়ি খাননি। আজ (০৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায় শুধু চা আর গ্লুকোজ বিস্কুট খান তিনি। এরপর দুধের জন্য আবেদন করেন।

উল্লেখ্য, ২০ বছর আগের মামলায় বৃহস্পতিবার (০৫ এপ্রিল) সালমান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের যোধপুরের আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেব কুমার খত্রী। পাশাপাশি তাঁকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে। তাঁকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

একই মামলায় অন্য ৪ অভিযুক্ত ছিলেন- সাইফ আলি খান, টাবু, নীলম এবং সোনালি বেন্দ্রে। তাদের বেকসুর ঘোষণা করেছেন আদালত।

সালমান খানের আইনজীবী এইচ এম সারস্বতের দাবি ছিল, সরকারি কৌঁসুলি অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করতেই পারেননি। মামলা সাজাতে ভুয়া সাক্ষী দাঁড় করিয়েছেন। এমনকী, বন্দুকের গুলিতেই যে হরিণ দু’টির মৃত্যু হয়েছিল, তাও সরকারি কৌঁসুলি প্রমাণ করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন সারস্বত।

২৮ মার্চ নিম্ন আদালতে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ের শুনানি শেষ হয়।

অন্যদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ১৯৯৮ সালের ১ এবং ২ অক্টোবর যোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে আলাদা আলাদা জায়গায় দু’টি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করেছিলেন সালমান খান। সেই সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাইফ আলি খান, নীলম, টাবু এবং সোনালি বেন্দ্রে।

রাজস্থানের কঙ্কানি এলাকায় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গুলির শব্দ শুনে তারা সালমানদের জিপসি গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিলেন। কিন্তু তাদের ধরা যায়নি। সেই সময় চালকের আসনে ছিলেন স্বয়ং সালমান। প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে তারা পালিয়ে যান বলে দাবি করেন গ্রামবাসীরা।

২০০৭ সালে এই মামলায় কয়েকদিন যোধপুর কারাগারে ছিলেন সালমান খান। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে যখন এই মামলার রায় দেওয়া হয় তখন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন সালমান। কিন্তু এই রায়ের ওপর আবারও আপিল করা হয়।

এদিকে এই মুহূর্তে সালমানের উপর ১ হাজার কোটি রুপিরও বেশি লগ্নি রয়েছে।


সর্বশেষ খবর