শেষ খেয়া পার হয়ে চলে গেলেন রাজীব
আমারবাংলা ডেস্কঃ হয়তো সময় যাবে থেমে,সুর্য যাবে ডুবে, হয়তো কেউ রবে না পাশে, ভয় পেয় না তুমি হবেনা একা, হাত বাড়ালেই পাবে বন্ধু আমাদের দেখা। কিন্তু ছন্দ আর বাস্তবতা এক নয়। শেষ খেয়া পার হয়ে চলে গেলেন রাজীব।
দুই বাসের প্রতিযোগিতায় ডান হাত হারানো রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন (২১)।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়েছিল তাঁকে।
গতকাল সোমবার দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আইসিইউর চিকিৎসক রাজীবকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজীবের স্বজন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই ) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক উন্নতির পর গত সোমবার থেকে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজীবের মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে যায়। সেই থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর।
লিপি আকতার বলেন, আমাদের রাজীব আর নেই। মঙ্গলবার সকালে রাজীবের লাশ গ্রামের বাড়ি বাউফল নিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে, রাজীবের মৃত্যুতে যাত্রী অধিকার আন্দোলন শোক জানিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তারা।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে।
পড়ালেখার ফাঁকে একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে নিজের আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ভাইয়ের খরচ চালানোর সংগ্রাম করে আসছিলেন এই তরুণ।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের গেটে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের ওই ছাত্র। হাতটি বেরিয়ে ছিল সামান্য বাইরে। হঠাৎই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে। এ সময় দুই বাসের প্রবল চাপে গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাতের কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। দুর্ঘটনার পর তাকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে ও পরে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৪টায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে রাজীব। এরপর ওই দিন সকাল ৮টায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।