নড়াইলের চারণ কবি মোসলেম উদ্দীনের ১১৫তম জন্মজয়ন্তী মেলা শুরু
নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ সোমবার (২২ অক্টোবর) সকালে জারি সম্রাটের জন্মস্থান সদর উপজেলার সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে লোকসঙ্গীতের অন্যতম ধারা জারি ও মরমী গানের পুরোধাপুরুষ জারি সম্রাট চারণ কবি মোসলেম উদ্দীনের আধ্যাত্মিক ভাবাদর্শে সমুজ্জ্বল কার্তিকের মধুপূর্ণিমা উদযাপন ও ১১৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলে দু’দিনব্যাপী মোসলেম মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, জারি সম্রাট মোসলেম স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ খেলাধুলা, মোসলেম বিষয়ক কবিতা পাঠ, মধুপূর্নিমার উদ্বোধন, কবির জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা, মোসলেম সঙ্গীত, জারিগান, মোসলেম জীবনীভিত্তিক নাটক ও জারিগান, সামা মাহফিল, দোয়া অনুষ্ঠান তোবারক বিতরণ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন নড়াইলের নবাগত জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, প্রধান বক্তা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, সম্মাণিত অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। প্রয়াত জারি সম্রাট মোসলেম উদ্দিনের ছেলে জারী বয়াতী রওশন আলী, আমার বাংলা২৪কে জানান, তার বাবা মোসলেমের জীবদ্দশায় ১৯২৯ সাল থেকে প্রতিবছর কার্তিকের মধু পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জারি গানকে পরিশীলিত একটি শিল্পম-িত লোকসাহিত্যের অঙ্গণে মোসলেম উদ্দীন নিয়ে আসেন। জারিগানের পাশাপাশি কবিগান, ভাবুকগান এমনকি ঝুমুর যাত্রাগানের অদ্বিতীয় প্রবাদ পুরুষ জারিসম্রাট মোসলেম উদ্দিন। তিনি ২০টি জারি গানের পালা কাহিনী, প্রশ্ন জবাব, ব্যঙ্গ, উপদেশ, ধুয়া গান, ভজন, বিচ্ছেদ, ভাব, ভাটিয়ালি, অষ্টক, কীর্তন, হালুই, সারি, হামদ, নাত-এ-রাসুল, খাঁজার গান, দেশাত্ববোধক, শ্লেষাত্মক, রণসঙ্গীত, কৃষির গান ইত্যাদি বিষয়ে দেড় সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন।
কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৯ সালে চারণ কবি মোসলেম উদ্দীন জারি সম্রাট উপাধি, ১৯৭৬ সালে ফররুখ আহমেদ সাহিত্য স্বর্ণপদক(গীতি কবিতায়) সহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন।
মরমী এই কবি মোসলেম উদ্দিন ১৯০৪ সালের ২৪ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার তারাপুর প্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯০ সালের ১৯ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি।