সব

দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে ঝিনাইদহে জন্ম দুদুলতা ধানের আবাদ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Monday 29th October 2018at 6:50 am
103 Views

জাহিদুর রহমান তারিকঃ ঝিনাইদহে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে রোগবালাই-সহিষ্ণু দুদুলতা ধানের। জাতটির উদ্ভাবক দুদু মিয়ার সফলতা দেখে অন্য কৃষকরাও ধানটির আবাদ করেছেন।

জাতটির উদ্ভাবক ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক দুদু মিয়া জানান, এই জাতটি রোগবালাই-সহিষ্ণু ও উচ্চতায় খাটো হওয়ার কারণে ঝড় বা বাতাসে হেলে পড়ে না। পোকামাকড়ের আক্রমণও হয় কম। ধানটির চাল চিকন। ভাত খেতে সুস্বাদু। বাজার মূল্যও অপেক্ষাকৃত বেশি। ফলনও ভালো। দুদু মিয়ার ভাষ্য, নতুন জাতের এই ধানের প্রতিটি শীষে সাড়ে তিনশ থেকে চারশটি পর্যন্ত পুষ্ট ধান হচ্ছে, যা অন্যান্য ধানের শীষের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। এই ধানের গোছায় চিটা হয় না, তাই ফলন ভালো হচ্ছে। ধান থেকে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে, তা দেখতে অনেকটা বেগুনের বিচির মতো।

কোটচাঁদপুর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মাসুদ হোসেন, সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রীন চাষি মো. ইদ্রিস আলী, শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের সাহেব আলীসহ একাধিক কৃষক বলেন, ‘দুদু মিয়া কয়েক বছর ধরে নতুন ধানের আবাদ করছেন। অন্যদের জমিতে কোনও কারণে ধানের ফলন কম হলেও, তার নতুন জাতের ধানে ফলন ভালো হচ্ছে। তাই এই বছর তার কাছ থেকে ধানের বীজ নিয়ে আবাদ করেছিলেন। বিঘাপ্রতি (৪৬ শতাংশে ১বিঘা হিসাবে) ৪২ মন ধান হয়েছে। ধানের মুল্যে ১১”শ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে।

সম্প্রতি তার ধানক্ষেত পরিদর্শন করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ ও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম। দুদু মিয়ার ধানক্ষেত পরিদর্শন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ বলেন, ‘নতুন জাতের ধানের উদ্ভাবক কৃষক দুদু মিয়াকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। ধান উৎপাদনে সার, সেচ, আগাছা দমনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনাও  আমাদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। ধানটি দেখে মনে হচ্ছে, এবারও গতবারের মতো আশানুরূপ ফলন হবে। এই প্রেক্ষিতে এই জাতের ধানটি ভবিষ্যতে দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

এমদাদুল হক দুদু মিয়া বলেন, ‘গত বছর ধানের ফলন ভালো পেয়েছিলাম। এই ধান ঝিনাইদহের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমি এই বছর ৮’শ কেজি ধানের বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণের প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক দুদুলতা ধানের আবাদ করছেন।

সরেজমিনে কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শন করে দেখেছি, আমার কাছ থেকে নেওয়া ধান বীজের ক্ষেতে ধানের অবস্থা অত্যন্ত ভালো। আমি আশা করছি তারাও আমার মতো ফলন পাবেন। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে আমার কাছে অগ্রিম বীজের চাহিদা জানিয়েছেন।

কাজেই এই বছরের তুলনায় আগামী বছর এই ধানের আবাদ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।


সর্বশেষ খবর