গাজীপুরে ব্যাটারি কারখানা গুঁড়িয়ে দিলো এলাকাবাসী
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান (আতিক)ঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সরপাইতলি এলাকায় গহীন জঙ্গলে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত একটি অবৈধ ব্যাটারি কারখানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী।
৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ব্যাটারি কারখানার অ্যাসিডে ক্ষতিগ্রস্ত শতশত জনতা লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালিয়ে ওই কারখানাটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কোনাবাড়ী-আশুলিয়া সড়কের গাজীপুর সিটির ৫নং ওয়ার্ডের সরপাইতলি এলাকায় তিন বছর আগে গাজীপুর মহনগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ রেজাউল করিমসহ কয়েকজন গহীন জঙ্গলের ভেতর কিছু জমিতে একটি অবৈধ ব্যাটারি কারখানা গড়ে তোলেন। ওই কারখানায় পুরাতন ব্যাটারি কয়েকটি চুলি¬তে পুড়িয়ে সিসা সংগ্রহ করা হয়। পরে কারখানার পরিধি ও চুলি¬র পরিমাণ বেড়ে ৩৬টি হয়। এ সময় চুলি¬তে সিসা গলানোর ধোঁয়ায় এলাকায় ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দেয়। গরু-ছাগল ও বিভিন্ন বন্যপ্রাণি মরতে শুরু করে।
স্থানীয় দলিল উদ্দিন জানান, নুরুল ইসলামের দুইটি, কালাম মন্ডলের পাঁচটি, রুজিনা আক্তারের তিনটি, আব্দুর রউফ মন্ডলের একটি ও জয়নালের একটিসহ এ পর্যন্ত ৪০টি গরু ও প্রায় ২০ ছাগল মারা গেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী অবৈধ ব্যাটারি কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছিল না।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার এমওয়াই বেলালুর রহমানের কাছে একটি অভিযোগ দাখিল করেন স্থানীয়রা। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিএমপির সহকারী কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) মোঃ রুহুল আমিন সরকার বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই কারখানা পরিদর্শনে যান। কিন্তু এর আগেই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী লাঠিসোটা নিয়ে ওই অবৈধ ব্যাটারি ও এসিড কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, রেজাউল করিম ছিলেন এই কারখানার মূল মালিক। তার সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী মনিরুজ্জামন, আদনান, রফিকুল ইসলাম ও রুবেলসহ আরও কয়েকজন জড়িত।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুছ আলী (৬৫) জানান, ওই কারখানা থেকে রাত-দিন কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত অ্যাসিড ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে, পশু পাখি মারা যাচ্ছে। অনেকবার কারখানা বন্ধ করতে বলা হলেও তারা প্রভাব খাটিয়ে কারখানাটি চালিয়ে আসছিল।
জিএমপির সহকারী কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) রুহুল আমিন সরকার জানান, উত্তেজিত এলাকাবাসী এক জোট হয়ে ওই কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।