সব

এবার শেখ জামালের ঘরে এলো ক্রিকেটে ট্রফি

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 5th March 2019at 8:29 am
FILED AS: খেলা
66 Views

খেলাধুলা ডেস্কঃ চ্যাম্পিয়ন হতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো প্রাইম দোলেশ্বরকে। টর্নেডো ব্যাটিং করতে হতো ফরহাদ রেজাসহ গোটা দলকে। প্রিমিয়ার ক্রিকেট টি-২০ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে শেষ ২ ওভারে যখন ৪৯ রান দরকার শীতলক্ষ্যা পাড়ের দলটির, তখন ব্যাটকে খোলা তরবারি বানিয়ে শেষ চেষ্টা করেছিলেন ফরহাদ রেজা।

১৯ নম্বর ওভারে দুই ছক্কা ও দুই চারে ২১ রান তুলে স্বপ্নটাকে আকাশসমান করেছিলেন। কিন্তু ২০ নম্বর ওভারের প্রথম বলে উইকেটরক্ষক অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান শূন্যে ভেসে যে দক্ষতায় তার ক্যাচটি নেন, তাতেই প্রাইম দোলেশ্বরের স্বপ্ন কফিনবন্দী হয়ে যায়। সোহানের অবিশ্বাস্য ওই ক্যাচেই শিরোপা নিশ্চিত করে নেয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ২৪ রানে সহজ জয়ে ক্লাবের ইতিহাসে ক্রিকেটে প্রথম শিরোপা জিতে উৎসবে মেতে ওঠেন নুরুল হাসান সোহান, ইমতিয়াজ হোসেন তান্না, তানভির হায়দার, জিয়াউর রহমানরা।
এদিন হাতের আঙ্গুলের এক্স-রে করে বিকালে চলে আসেন সাকিব আল হাসান। সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন শেখ জামাল ও প্রাইম দোলেশ্বরের ফাইনাল। উত্তেজনার ফাইনালের পুরোটা সময় দেখেননি ঠিকই, তবে যতটুকু সময় ছিলেন, উপভোগ করেছেন দুই দলের পারফরম্যান্স।

ইমতিয়াজ জাতীয় দলের হয়ে কখনোই খেলেননি। তাই খুব পরিচিত নন ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটের খুবই পরিচিত মুখ। ইমতিয়াজের বাড়ি সিলেট এবং বয়স ৩৪। অভিজ্ঞতায় সাকিব, মাশরাফিদের চেয়ে খুব পিছিয়ে নন। বরং ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সের বিচারে বেশ উজ্জ্বল। ইমতিয়াজ এর আগেও টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলেছেন। ২০০৬ সালে মোহামেডানের হয়ে টি-২০ ফাইনালে খেলেছিলেন ৮২ রানের ইনিংস। তার ওই রানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহামেডান। গতকাল খেলেছেন ৫৬ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস। তাতেই বাজিমাত। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ধানমন্ডি পাড়ার দল শেখ জামাল।

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপে আকাশ সারাদিনই মেঘে ঢাকা ছিল। বৃষ্টি না ঝরলেও মুখ ভার করেছিল দিনভর। এমন বৃষ্টিভাবাপন্ন আবহাওয়ায় টস জিতে ব্যাটিং করে শেখ জামাল। দুই ওপেনার ফারদিন ও ইমতিয়াজ দেখেশুনে ব্যাটিং করে প্রথম ২ ওভারে রান নেন মাত্র ৪। তৃতীয় ওভারে খোলশ ছেড়ে আরাফাত জুনিয়রের দ্বিতীয় ওভারে চার বাউন্ডারিতে ১৮ রান নেন ইমতিয়াজ। এরপর আর থেমে থাকেননি দুই ওপেনার। বিচ্ছিন্ন হন স্কোর কার্ডে ৬২ রান লিখে।

দলীয় ৭.৫ ওভারে মিডিয়াম পেসার মানিক খানকে কাভার পয়েন্টে তুলে মারতে যেয়ে সাইফ খানের তালুবন্দী হওয়ার আগে ফারদিন খেলেন ১৮ রানের ইনিংস। ইমতিয়াজ সাজঘরে ফিরেন ১৪ ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে। আরাফাত সানির বলে আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংসটি খেলেন ৪টি চার ও ২টি ছক্কায়।

১০৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন অধিনায়ক নুরুল হাসান ও তানভির। দুজনে যোগ করেন ৪৯ রান মাত্র ২৭ বলে। ইনিংসের ২০ নম্বর ওভারের ৪ ও ৫ নম্বর বলে দুজনেই ফিরে যান ফরহাদ রেজার বলে। সাজঘরে ফেরার আগে তানভির ৩১ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন মাত্র ১৫ বলে। সোহান ৩৩ রান করেন ২৭ বলে।

পরপর দুই বলে তানভির ও সোহানকে সাজঘরে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়ে তোলা ফরহাদের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে আশায় জল ঢেলে দেন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে শেখ জামালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৭ রান।

১৫৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দোলেশ্বরের দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ আরাফাত ৬২ রানের ভিত দেন। কিন্তু পরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র ফরহাদ রেজা ছাড়া আর কোনো ক্রিকেটারই রান করতে পারেননি। ফলে দোলেশ্বরের ইনিংস থেমে যায় ২০ ওভারে ১৩৩ রানে। ওপেনার সাইফ ২৬ রান করেন ২৮ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায়। আরাফাত জুনিয়র ৩৩ রান করেন ২৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায়। টুর্নামেন্ট সেরা ফরহাদ রেজা ৪৫ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন মাত্র ২০ বলে ২ চার ৫ ছক্কায়।

ফরহাদ সব মিলিয়ে ১০৭ রান ও ১১ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা হন এবং ম্যাচ সেরা হন ইমতিয়াজ। পুরস্কার বিতরণ করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে ফুটবলে অনেক চ্যাম্পিয়নের ট্রফি থাকলেও এবার প্রথমবারের মতো ঠাঁই নিল ক্রিকেটের ট্রফি। এ বিজয় সোহানদের সামনে প্রিমিয়ার লিগে অনুপ্রেরণা জোগাবে।


সর্বশেষ খবর