শেখ রাসেল পুষ্পকাননে শোভিত তিতুমীরের ক্যাম্পাস
মোঃ সাখাওয়াত হোসেনঃ প্রধান ফটক পেরিয়ে কয়েক কদম আগাতেই চোখে পড়বে একটি সাইনবোর্ড। যেখানে লিখা ‘শেখ রাসেল পুষ্পকানন’। আর যে কাননে ফাগুনের শেষ বেলায় ফুটে আছে অসংখ্য সুরভিত ফুল। সৌরভ ছড়ানো সেসব ফুল যেন সরকারি তিতুমীর কলেজের সবুজের সমারোহ।
শেখ রাসেল পুষ্পকাননের সাইনবোর্ডে আরো লেখা ‘আমি একটি ফুলের বাগান শুরু করেছিলাম। এখানে কোনো ফুলের বাগান ছিলো না জমিদার সিপাহিদের দিয়ে আমি ওয়ার্ড থেকে ফুলের গাছ আনাতাম। আমার বাগানটা খুব সুন্দর হয়েছিল।’
বাক্যগুলো ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র ১৭১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে। বুঝাই যাচ্ছে ফুলের বাগানটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের নামে করা। যেখানে গোলাপ, গাঁধাসহ বিভিন্ন রঙের ফুল গাছ রয়েছে। কাননের ভেতরটাও বেশ পরিপাটি। সতেজ গাছ, পরিচ্ছন্ন ফুল, রয়েছে চতুর্দিকে বেড়া- এ যেন নিপুণ হাতে গড়া। আর এই নিপুণ হাতের কারিগর সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ। এই ছাত্রসংগঠনটির অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে অনিন্দ্য সুন্দর পুষ্পকানন। যার নেতৃত্বে ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো: রিপন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়ল।
এমন শুভ্র উদ্যোগের প্রশংসা করে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্রলীগ এমন একটি বাগান তৈরি করায় আমরা মুগ্ধ হয়েছি। কেননা, ক্যাম্পাসে এর আগে এতো সজ্জিত বাগান ছিল না। যা আড্ডার সতেজতার দারুণ অনুষঙ্গ।
২য় বর্ষে পড়ুয়া লুভাবা ইসলাম বলেন, এই বাগানটা এখন আমাদের খুব কাছে। এখানে দাঁড়িয়ে আমরা ছবি তুলতে পারি। ফুলের গন্ধে বাগানের পাশে আড্ডা দিতে সাধ লাগে। উদ্যোগী সকলকে ধন্যবাদ।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, ছাত্রলীগ শুধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডই করে না, তারা যেকোনও ধরনের সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। তারই প্রমাণ এই বাগান। ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করে। আর বঙ্গবন্ধুর শখ ছিল বাগান করা। বাগানের ফুল হচ্ছে ভালোবাসার প্রতীক। আমরা মারামারি হানাহানি নয়। ভালোবাসার সৌরভে মুখরিত হোক এই ক্যাম্পাসক- এই প্রত্যয়ে আমাদের এই বাগান করা।
তারা জানান, বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তিনি বাগান গড়ে তোলেন। তার এই কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে নবীন ছাত্রছাত্রীকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে আনতেই এই ব্যতিক্রমী উদ্দোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নামকরণ সম্পর্কে বলেন, শেখ রাখেলকে ফুলের সাথে তুলনা করা হয়। আর এর জন্য বাগানের নামকরণ শেখ রাসেল করা হয়েছে।
জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই পুষ্পকাননের উদ্বোধন করবেন।
আর এই উদ্যোগের পেছনে আমাদেরকে উৎসাহ দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আশরাফ হোসেন। যোগ করেন ছাত্রলীগের এই দুই নেতা।
কলেজের অধ্যক্ষের মতে, এটি খুবই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। বলেন, আমার দ্বায়িত্ব এই কলেজের লেখাপড়ার পাশাপাশি কলেজের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। কলেজটি শুধু আমার কর্মক্ষেত্র নয়। এটা আমার পরিবারের একটা একটা অংশ। আমরা যেমন পরিবারকে সব সময় আগলে রাখি ঠিক তেমনি আমি যতদিন এই কলেজে দ্বায়িত্বরত আছি ততদিন নিজ পরিবারের মতই এই কলেজকে আগলে রাখবো।
শেষ রাসেল পুষ্পকাননে রয়েছে অন্তত ২০ প্রজাতির ফুল, ফল ও ঔষুধি গাছ। নিয়মিত পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ এর ফলে পুষ্পকাননটি ক্যাম্পাসকে যেমন করেছে শোভাময় তেমন শিক্ষার্থীদের মনকেও করেছে মশোভিত।
কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবিষ্যতে এই পুষ্পকানন এর পরিধি বাড়ানো যায় কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখবেন তারা।