বীরাঙ্গনাকে সম্মাননা দিল ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর এ দেশীয় দোসরদের হাতে নির্যাতিত বীরাঙ্গনা কানন গোমেজকে সম্মাননা দিয়েছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ইউনিভার্সিটির সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁকে এ সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের নির্যাতিত হওয়ার হৃদয়বিদারক কাহিনী বর্ণনা করেন কানন গোমেজ। তখন তিনি ছিলেন ১৯/২০ বছরের তরুণী। তিনি বলেন, নির্যাতিত হওয়ার বিষযটি বুকে পাথরচাপা দিয়ে রেখেছিলেন দীর্ঘদিন। নির্যাতনের ওই ঘটনার বছর তিনেক পর তাঁর বিয়ে হয়। এরই মধ্যে তার কোল আলোকিত করে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানের জন্মের বছরখানেকের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে সংসার ভেঙ্গে যায়। সন্তান নিয়ে এক ভীষণ অনিশ্চিত জীবন শুরু হয় তাঁর। তারপর থেকে কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে যাযাবরের মতো জীবন কাটাতে হয়েছে তাঁকে। কানন গোমেজের জীবনের এই রূঢ় বাস্তবতার গল্প অনুষ্ঠানের পরিবেশ ভারী করে তোলে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে উচ্চারিত তাঁর হাহাকার ও বেদনার কথাগুলো উপস্থিত দর্শকদেরও চোখ ভিজিয়ে দেয়।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি কানন গোমেজকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। তাঁর হাতে আর্থিক সহায়তার একটি খাম তুলে দেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং অ্যাডমিশন কমিটির চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মোহাম্মদ আলী আজ্জম। মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার এ এস মাহমুদ এবং সমাপনী বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার আবুল বাশার খান।