আমি নিজের ওপর বেশি চাপ নিয়ে নিচ্ছি : তামিম
লাধুলা ডেস্কঃ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত স্বরুপে দেখা যায়নি দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে। প্রথম তিন ম্যাচে তামিম করেছেন যথাক্রমে ১৬, ২৪ ও ১৯। দলের সেরা ব্যাটসম্যানের নামের পাশে যা বেশ বেমানান। উইকেটে থিতু হয়ে এভাবে আউট হওয়াও সাম্প্রতিক সময়ে তামিমের জন্য বেশ বিরল। তামিম মনে করছেন নিজের ওপর নিজের উচ্চাশার কারনেই চাপে পড়ে যাচ্ছেন তিনি।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচের কোনটিতেই তামিমকে আউট অফ টাচ মনে হয়নি। প্রতি ইনিংসেই অন্তত ৪০ মিনিট ব্যাট করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রাবাদা-এনগিডি, নিউজিল্যান্ডের বোল্ট-ফার্গুসন, ইংল্যান্ডের জফরা আর্চারের পেস সামালও দিয়েছেন দারুনভাবেই। তবে প্রতি ইনিংসেই ভুল শট খেলে আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। সাম্প্রতিক সময়ে এমন তামিমকে দেখেনি বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শর্ট বলে শট খেলতে যেয়ে আউট হয়েছেন তিনি। দুটি শট দেখেই মনে হয়েছে তিনি শট খেলার সময় দ্বিধাদন্দে ভুগছিলেন। তামিম নিজেই মানছেন দুটি শটই ছিল ভুল সিদ্ধান্তের ফসল। “আমার প্রস্তুতি ঠিকই হচ্ছে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল শট খেলে আউট হচ্ছি বারবার। প্রথম ম্যাচে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) আউটটা ভালো বলেই ছিল, ওটা নিয়ে চিন্তা নেই। কিন্তু বাকি দুই ম্যাচে বাজে সিদ্ধান্ত ছিল ওই সময়ে ওইরকম শট খেলা।” নিজের ব্যাটিং নিয়ে হতাশার কথা জানান তামিম নিজেই। “আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন আমি যতক্ষন ব্যাটিং করেছি মোটামুটি ভালই ছন্দে ছিলাম। প্রত্যেক ইনিংসেই একটি করে ভুল করেছি আর সেগুলোতেই আউট হয়েছি। আমি আমার ব্যাটিং সম্পর্কে জানি, এসব সময়ে আমার আউট হওয়ার কোন কারন নেই। আমি আগেও বিশ্বের বাঘা বাঘা বোলারদের মোকাবেলা করে ভালো রান করেছি, এখন কেন পারবনা!”
তামিম জানান তিনি চেষ্টা করছেন রানে ফিরতে, তবে তার আশংকা হয়তো একটু বেশিই চেষ্টা করছেন যা তার ওপড় বাড়তি চাপ ফেলছে। তবে তামিমের বিশ্বাস এক ম্যাচে রানে ফিরলেই চাপমুক্ত হয়ে বাকি টুর্নামেন্ট খেলতে পারবেন তিনি। শংকার কথা হচ্ছে, গত চার বছরে তার ফর্ম দারুন থাকলেও বিশ্বকাপ ইতিহাস তার বিপক্ষে রয়েছে। গত বিশ্বকাপের পর থেকে তামিমের গড় প্রায় ৫৭, ওপেনারদের তার ওপরে রয়েছেন শুধু রোহিত শর্মা। বলার অপেক্ষা রাখেনা, গত চার বছরে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান খান সাহেবেরই।
“আমার নিজের উচ্চাশাই আমার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে। শুধুমাত্র আমার আশেপাশের মানুষই এটা বুঝতে পারবে। আমি শুধু চাই ২০১৫ এর দিনগুলোতে ফিরে না যেতে, সেটা আমার ও আমার পরিবারের জন্য এক ভয়ানক সময় ছিল।” তামিমের বিশ্বাস এক দুই ইনিংস ভালো হলেই সবাই এসব আবার ভুলে যাবে। সেই আশাতেই রয়েছেন তিনি।
তামিম রানে ফিরুক এই আশা সকলের, তিনি স্বরুপে ফিরলে যে বদলে যাবে বাংলাদেশ ব্যাটিং অর্ডারের চেহারাটাও। তবে চাপমুক্ত হয়ে খেলাটাও জরুরি। দিনশেষে এটি শুধুই একটি খেলা, জীবন-মরণের বিষয় নয়।