গোলা ভরা ধান,বুক ভরা কষ্ট
স্টাফ রিপোর্টার ঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। ফলন ভালো হওয়ার পরেও হতাশায় পড়েছে কৃষক। এ বছর ধান প্রতি বস্তা (৮০ কেজি ) ১০০০-১১০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। জেলা কৃষি অফিস জানায়, ঠাকুরগাঁও ৫টি উপজেলায় এ মৌসুমে ১ লাখ ২৯ হাজার ৭’শ ১৩ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫ শ” ২৮ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত ৮০থেকে ৯০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের দাম শুরুতে ভালো পাওয়া গেলেও এখন অনেক কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে কৃষকরা। এখনো কোন অটো রাইস মিল বা সরকার ধান সংগ্রহ করছে না তাই বাজারের এই অবস্থা মনে করছে কৃষক। সদর উপজেলার হাবিব মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, এ মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের ধানের চাষ করেছি। কাটা মারা শেষ। বিঘা প্রতি ২২-২৫ মন হারে ফলন হয়েছে। ১০০০-১১০০ টাকা দরে বস্তা বিক্রি করছি। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
গড়েয়া ইউনিয়নের আশরাফুল বলেন, ‘পাঁচ বিঘায় গুটিস্বর্ণা ধানের আবাদ করেছিলাম। বিঘাপ্রতি ধানের ফলন পেয়েছি ২১ মণ। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার টাকা। ধান বেচে দেখা যাচ্ছে উৎপাদন খরচ আর ধান বিক্রির টাকায় সমানে সমান। ধান বেচে কোনো লাভের মুখ দেখলাম না।’
এবার চুক্তিবদ্ধ ও বর্গাচাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত। চুক্তিবদ্ধ ও বর্গাচাষিদের ধান কাটা ও মাড়াই শেষে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান অথবা সমপরিমাণ টাকা দিতে হয় গেরস্থকে। এবার গেরস্থর পাওনা মেটানোর পর নিজের পুঁজিই থাকছে না। মিলনপুরএলাকার চুক্তিবদ্ধ চাষি লোকমান বলেন, ‘আমি দুই বিঘা জমি চুক্তিতে নিয়ে গুটিস্বর্ণা ধানের আবাদ করেছি। ধান বিক্রি করে কোনো লাভ হয়নি এবার। আমার পকেট থেকে দিতে হচ্ছে গেরস্থকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী খান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান চাষীরা ভাল ফলন পেয়েছে। বর্তমানে ধানের দাম কিছুটা কম হলেও কয়েকদিন পরে আশানারুপ দাম পাবে বলে আশা করছি। ‘আমন ধানের বাজারটা ব্যবসায়ী, পাইকার ও ফড়িয়া নির্ভর। কাটা-মাড়াইয়ের শুরু থেকেই ধানের বাজার তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করছেন। ফলে উৎপাদকেরা তাঁদের কাছে তেমন দাম পাচ্ছে না।
সূত্র ঃ টাইম নিউজ বিডি