নড়াইলে মহিলা কলেজের অফিস সহকারি (পিয়ন) নিয়োগে দুর্নীতির শিকার
উজ্জ্বল রায় নড়াইল : নড়াইলের লক্ষীপাশা মহিলা কলেজের অফিস সহায়ক (পিয়ন) শিকদার শফিউল হাসান স্বপনও অধ্যক্ষের দুর্নীতির কালো থাবা থেকে রেহাই পায়নি।
জানা গেছে, লক্ষীপাশা মহিলা কলেজ কতৃপক্ষ বিগত ২০১৭ সালের জুলাই মাসে অফিস সহায়ক (পিয়ন) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক উক্ত পদের জন্য নড়াইলের উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের মৃত মনজুর শিকদারের ছেলে শিকদার শফিউল হাসান স্বপনসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদন যাচাই-বাছাই করে নগদ ২লক্ষ ৫০ হাজার এবং ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৩লক্ষ টাকা গ্রহন করে অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম শিকদার। শফিউল হাসান স্বপনকে চুড়ান্ত করে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই নিয়োগ প্রদান করেন।
নিয়োগের পর অধ্যক্ষের গ্রামের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন গৃহস্থলীর কাজের জন্য। সেই থেকে স্বপন রয়েছেন অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলামের বাড়িতে। স্বপন কলেজে আসেন মাস শেষে শুধু বেতনের জন্য।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী শিকদার শফিউল হাসান স্বপন গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তার চাকুরীর জন্য অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম সাড়ে ৫লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করেছেন। নগদ ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ৩লক্ষ টাকা গত ২০১৭ সালের অক্টবর মাসে রুপালী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখা হইতে আমার মাসিক বেতনের বিপরীতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ লোন পাশ করিয়ে একাউন্ট নং ১৪৯৪ হইতে অধ্যক্ষের একাউন্ট নং পিএল ১১১৮ স্থানান্তর করে নেয়। নিয়োগের পর আমাকে অধ্যক্ষের নড়াইলের বাড়িতে গৃহস্থলীর কাজের জন্য প্রেরন করেন। আমি ২০১৭ সালের আগষ্ট মাস থেকে অধ্যক্ষের বাড়িতে গৃহস্থলীর কাজ করে গত দু’সপ্তাহ হয় কলেজে দায়ীত্ব পালন করছি।
স্বপন আরো অভিযোগ করে বলেন, তার মাসিক বেতন হইতে ব্যাংকের লোনের টাকা কর্তন করে সামান্য কিছু টাকা হাতে পাই। সেই টাকায় তার সংসার চলেনা। তিনি পরিবার নিয়ে খুব মানবেতর জিবন যাপন করছেন। টাকা ফেরৎ পেতে কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষের সকল প্রকার দুর্নীতি ও অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ওই কলেজের শিক্ষক ঠাকুর মোঃ ফেরদৌস ওয়াহিদ।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করেন উল্লেখ্য শিক্ষা জোযোনায় এক এর পর এক দুর্নীতির রির্পোট: তদন্তে জরুরী সভা রির্পোট না করার জন্য অনুরোধ: কলেজের সভাপতি নড়াইলের ডিসি আনজুমান আরা মহোদয়: নড়াইলের লক্ষীপাশা মহিলা আদর্শ ডিগ্রি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতির তদন্তেপরিচালনা পর্ষদের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত কলেজের অধ্যক্ষের সিমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদ ও তার অপসারণ দাবীতে গত ৫সেপ্টেম্বর এলাকাবাসি মানববন্ধন পোষ্টার ও লিফলেট বিতরণ করায় নড়েচড়ে বসেছেন উপজেলা ও জেলা প্রশাসন। তারই আলোকে সকাল ১১টায় কলেজ কাম্পাসে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, ডিজি প্রতিনিধি ও সাবেক সাংসদ এ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র, কোয়াপ্ট সদস্য ডাক্তার শেখ আবুল হাসনাত পিন্টু, অভিভাবক সদস্য আজিজুর রহমান আর্জু ও বাদশা শেখ।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী বুধবার (১১সেপ্টেম্বর) ফের সভা আহব্বান করা হয়েছে। সেদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে সুষ্ঠ সমাধান হবে বলে সকলকে আশ্বস্ত করে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান কলেজের সভাপতি ডিসি আনজুমান আরা মহোদয়।
অপরদিকে অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলামের সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা ও স্বৈরতান্ত্রিকতার কারনে তার অপসারণসহ বিচারের দাবীতে সকাল ১১টায় উপজেলা কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার সভাপতি খোদ নড়াইল জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনজুমান আরা মহোদয়।
এ সময় এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সরদার আব্দুল হাই,দপ্তর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম সরু, পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া,সৈয়দ শাহজাহান সিরাজ বিদ্যুত, অভিভাবক মো:বাবন শেখ, বিএম লিয়াকত হোসেন, গাজী লিয়াকাত হাসান, সোলায়মান মোল্যা পান্নু, ইউসুফ মোল্যা ও এসএম সাহেদ মাহমুদ প্রমুখ।