সব

মার্কিন যে বান্ধবীকে নিয়ে নতুন সঙ্কটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Sunday 29th September 2019at 6:57 pm
43 Views

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে ব্রিটেন। আর এই মুহূর্তে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কথিত এক কেলেঙ্কারতে বিতর্কের মুখে পড়েছেন।

বরিস জনসন যখন লন্ডনের মেয়র ছিলেন, তখন তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক বান্ধবীকে সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এখন কোনো ফৌজদারি তদন্ত হবে কিনা, সেটা বিবেচনা করে দেখছে পুলিশের তদন্ত বিভাগ।

বরিস জনসনের কথিত বান্ধবী জেনিফার আরকিউরি একজন মার্কিন ব্যবসায়ী। তার একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বরিস জনসন সেই প্রতিষ্ঠানটিকে বিভিন্ন আর্থিক অনুদান দেয়া এবং জেনিফার আরকিউরিকে সরকারি খরচে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে নিয়ে যেতে তার অফিসকে ব্যবহার করেন।

বরিস জনসন অবশ্য কোনো ধরনের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেছেন। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, এই পুরো অভিযোগ আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

ঘটনাটি প্রথম জানা যায় গত সপ্তাহে সানডে টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনিফার আরকিউরি লণ্ডনের তৎকালীন মেয়র বরিস জনসনের ট্রেড মিশনের সদস্য হিসেবে বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং তার কম্পানিকে কয়েক হাজার পাউন্ডের অনুদানও দেয়া হয়।

লন্ডনের মেয়রের এবং তার অফিসের অন্য কর্মকর্তাদের কাজের তদারকি করে যে কর্তৃপক্ষ, সেই গ্রেটার লন্ডন অথরিটি জানিয়েছে, তারা এই বিষয়টি ইন্ডিপেন্ডেন্ট অফিস ফর পুলিশ কন্ডাক্ট বা আইওপিসি’র কাছে চিঠি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও একটি চিঠি পাঠিয়েছে গ্রেটার লন্ডন অথরিটি।

তাতে বলা হয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যখন আপনি লন্ডনের মেয়র ছিলেন, তখন জেনিফার আরকিউরির সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব ছিল এবং এ কারণে আপনি আরকিউরিকে বিভিন্ন ট্রেড মিশনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন। এছাড়া তাকে বিভিন্ন স্পন্সরশিপের মাধ্যমে অর্থ দিয়েছেন, যেগুলো তার বা তার প্রতিষ্ঠানের পাওয়ার কথা ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন

পুরো অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করছে ডাউনিং স্ট্রিট। তারা বলছে, বরিস জনসন যা করেছেন তা সব নিয়ম মেনে এবং স্বাভাবিকভাবেই করা হয়েছে।

সরকারের একটি উর্ধ্বতন সূত্র বলছে, এই অভিযোগটি এমন এক সময় তোলা হচ্ছে, যখন কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলন শুরু হচ্ছে। এটি যে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, তা স্পষ্ট।

বলা হচ্ছে, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি। আর এই অভিযোগ গণমাধ্যামে প্রচার করার আগে প্রধানমন্ত্রীকে এর জবাব দেয়ার কোনো সুযোগও দেননি গ্রেটার লন্ডন অথরিটির কর্মকর্তা।

কে এই জেনিফার আরকিউরি

নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে জেনিফার আরকিউরি নিজেকে একজন ‘উদ্যোক্তা’, সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট’ এবং ‘প্রডিউসার’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি প্রথম কাজ শুরু করেন ‘রেডিও ডিজনি’র ডিজে হিসেবে। এরপর তিনি ফিল্ম প্রযোজনা এবং পরিচালনার কাজেও যুক্ত ছিলেন।

তিনি লন্ডনে ‘দ্য ইনোটেক নেটওয়ার্ক’ নামে একটি কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কম্পানির মাধ্যমেই লন্ডনের মেয়রের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয়।

২০১২ সালে ওই কম্পানির এক অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন বরিস জনসন। জেনিফার আরকিউরি বরিস জনসনের যেসব ট্রেড মিশনের সদস্য হিসেবে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউইয়র্ক এবং তেল আবিবে সফরে যান, সেসব মিশনে তার কয়েকজন সফরসঙ্গীর সঙ্গে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি কথা বলেছে।

তারা বিবিসিকে বলেছেন, এসব মিশনে জেনিফার আরকিউরিকে খুব খাপছাড়া বলে মনে হচ্ছিল। কারণ ট্রেড মিশনের অন্য সদস্যদের তুলনায় তার কম্পানিকে অনেক কম যোগ্য বলে মনে হচ্ছিল।

মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর ট্রেড মিশনে জেনিফার আরকিউরিকে অন্তর্ভুক্তির আবেদন প্রথমে নাকচ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর তিনি আরেকটি কম্পানির মাধ্যমে আবেদন করেন, তখন সেই আবেদন গৃহীত হয়।

তেল আবিব সফরের ক্ষেত্রেও তার আবেদন প্রথমে নাকচ করা হয়। কিন্তু এরপর বরিস জনসনের অফিসের হস্তক্ষেপের পর তাকে ট্রেড মিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিবিসি বাংলা।


সর্বশেষ খবর