সব

টানা চার কার্যদিবস পতনে শেয়ারবাজার

AUTHOR: Mojammel
POSTED: Monday 27th January 2025at 4:40 pm
6 Views

প্রাইমনিউজ ডেস্ক :  টানা দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ততো ভারী হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রকট হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট। লোকসান কাটিয়ে উঠার কোনো পথই যেন পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা।

আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা টার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। সূচকের পতন হলেও ডিএসইর মতো সিএসইতেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

শেয়ারবাজারে চলা টানা দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারী মশিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিন আশায় থাকি শেয়ারবাজার ভালো হবে। মাঝেমধ্যে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও বেশিরভাগ দিন বাজারে দরপতন হচ্ছে। এতে আমাদের লোকসানের পাল্লাও ভারী হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বিনিয়োগকারীরা সব পথে বসে যাবেন। বাজারের ওপর কোনো আস্থা থাকবে না।

 

মিজানুর রহমান নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, প্রায় এক বছর ধরে শেয়ারবাজারে মন্দা চলছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও শেয়ারবাজারের চিত্র বদলায়নি। অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। অনেকের পোর্টফোলিওতে এখন ৬০-৭০ শতাংশ লোকসান। এই লোকসান কাটানোর কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না। দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসান ততো বাড়ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে লেনদেনের সময় ২০ মিনিট পার হওয়ার আগেই দাম কমার তালিকা বড় হয়ে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এ দরপতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৮টির এবং ৮১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৩০ পয়েন্টে নেমেছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। তবে লেনদেন তিনশো কোটি টাকার ঘরেই আটকে রয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৪ কোটি ৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি ৪৫ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মালেক স্পিনিংয়ের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির ১০ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ড্রাগন সোয়েটার।

 

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, এডিএন টেলিকম, ওরিয়ন ইনফিউশন, সেন্ট্রাল ফার্মা, লাভেলো আইসক্রিম, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং ইস্টার্ন হাউজিং।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৫টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।


সর্বশেষ খবর