সব

বাংলাদেশ ব্যাংকের চরম গাফিলতি

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Saturday 23rd April 2016at 10:42 am
39 Views

29ডেস্ক রিপোর্টঃ  বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি তাদের অন্তর্বর্তীকালীন পর্যবেক্ষণে বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এখানে তাদের গাফিলতির সুস্পষ্ট নিদর্শন পাওয়া গেছে।

ডিলিংরুমের স্থানে সার্বক্ষণিক লোকবল থাকার কথা থাকলেও ঘটনা ঘটার সময় তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই গাফিলতি ইচ্ছাকৃত কি না তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।

শুধু তাই নয়, এত বড় একটি ঘটনা এক মাস চেপে যাওয়াকে চরম অন্যায় কাজ হিসেবে অভিহিত করেছে তদন্ত কমিটি।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটি তাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনটি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হস্তান্তর করেন।

এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিষয়ে জানার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বুয়েটের তিনজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের গঠিত টাস্কফোর্স এই নিয়োগ দেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র এমনই তথ্য দিয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় ১০০ পাতার এই প্রতিবেদনে তদন্ত চলাকালীন বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে আলোচনার নানা দিক তুলে ধরা হয়। এখানে বলা হয়েছে, ঘটনা ঘটার সাথে সাথে বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অদৃশ্য কারণে তা করেনি। এটি একটি চরম অন্যায় কাজ বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তদন্ত কমিটি একই সাথে বেশ কিছু সুপারিশও সরকারের কাছে রাখে। বলা হয়েছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার সময় আরো কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার লোপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক মাস গোপন রাখে। পরবর্তীতে ফিলিপাইনের পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি শুরু হলে বাংলাদেশের মানুষ তা জানতে পারেন। ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একই সাথে দায়িত্ব অবহেলার কারণে ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর এম এ কাশেম ও নাজনীন সুলতানাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

গত ১৫ মার্চ রিজার্ভের এই অর্থ চুরি তদন্তে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দু’জন সদস্য হলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন এবং ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

কমিটিকে তার কার্যপরিধিও নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে পেমেন্ট ইনস্ট্রাকশন কিভাবে এবং কার বরাবর গেছে তা বের করা।

অবৈধ পরিশোধ ঠেকানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপের পর্যাপ্ততা ছিল কি না, বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রাখার যৌক্তিকতা ছিল কি না, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা বা দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা এই কমিটির।

চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা এবং অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করতেও বলা হয়েছে এই কমিটিকে।


সর্বশেষ খবর