পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পুনর্মূল্যায়ন’ হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার দায় অস্বীকার করায় পাকিস্তানের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক ‘পুনর্মূল্যায়ন’ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ধরনের অযাচিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণে পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেন মন্ত্রী। রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব কথা বলেছেন। বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার কথা অস্বীকার করে দেয়া পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার জন্যে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশাররফ ক্ষমা চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদনেও বলা আছে তারা কী করেছে। এত বছর পর তারা যদি বলে কিছু করেনি, তবে তা হাস্যকার বিষয় ছাড়া আর কিছু নয়।’ মাহমুদ আলী বলেন, পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া তারা দেখছেন এবং সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে চিন্ত-ভাবনা করছেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করার সমালোচনা করে গত ২২ নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দেয়। ইসলামাবাদের ওই প্রতিক্রিয়ার জবাবে ২৩ নভেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাকগলানোর কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর গত ৩০ নভেম্বর পাকিস্তানে বাংলাদেশের কাউন্সিলর মৌসুমী রহমানকে ডেকে নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান গণহত্যা ও দুস্কর্মের দায় অস্বীকার করে। এনিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। অনুষ্ঠানেশহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা হাসতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমরা অধীর আগ্রহে স্বীকৃতির অপেক্ষা করছিলাম।’ ‘কালের কষ্ঠিপাথরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক এই আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৬ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান। একই দিন বিকালে স্বীকৃতি দেয় ভারত।