রুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
জেলা ডেস্ক ঃ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ‘র্যাব পরিচয়ে’ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। ‘নিখোঁজ’ মো.সাইফুজ্জামান সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন বলে জানা যায়। তার বাড়ী রাজশাহী নগরীর রাজপাড়ার তেরোখাদিয়া পশ্চিমপাড়ায়। র্যাব দাবি করেছে, সোহাগকে ধরতে কোনো অভিযান তারা চালায়নি। আর থানা পুলিশ বলছে, তারাও এ বিষয়ে কিছু জানে না। সাইফুজ্জামান সোহাগের বাবা আক্কাস উজ জামান বলেন, গত বুধবার রাত ৩টার দিকে ১৫ জনের মতো একটি দল একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে এসে র্যাব বলে পরিচয় দিয়ে বাড়ির গেট খুলতে বলে।
“আমরা প্রথম দিকে গেট খুলতে চাইনি। অনেক জোরাজুরির পর গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে তারা তিন তলায় আমার ছেলে সোহাগের ঘরে যায় এবং ওর ল্যাপটপ খুলে কী কী আছে দেখতে থাকে।” আক্কাস বলেন, ওই সময় তাকে এবং তার স্ত্রীকে কয়েকজন মিলে ঘিরে রাখে। তারা কথাও বলতে দেয়নি, ছেলের ঘরেও যেতে দেয়নি। কিছুক্ষণ পর ল্যাপটপ ও ক্যামেরাসহ সোহাগকে তারা ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তার বাবার। “কোথায় নিয়ে যাচ্ছে জানতে চাইলে আমাদের বলেছে, সকালে থানায় খোঁজ করবেন।” আক্কাস জানান, সোহাগ বিবাহিত। তার স্ত্রী ঢাকায় মেডিকেলে পড়ে। খবর পেয়ে বাসায় এসে সে দেখেছে, তার গয়নাও পাওয়া যাচ্ছে না। সোহাগের বাবা বলেন, “আমরা বৃহস্পতিবার সকালে রাজপাড়া থানায় খোঁজ নিতে গেলে বলা হয়েছে, আমার ছেলে সেখানে নেই। পুলিশ নাকি কিছুই জানে না। “আমরা র্যাবের কাছেও গিয়েছি। তারা বলেছে, রাতে নাকি আমাদের এলাকায় কোনো অভিযানই চালায়নি।” সোহাগের শ্বশুর শেখ রেজাউর রহমান দুলাল রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের একজন পরিচালক। শুক্রবার সকালে চেম্বারের সম্মেলন কক্ষে সোহাগের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সাংবাদিকদের জানানো হয়। সাইফুজ্জামান সোহাগের মা শিরিন জামান জানান, র্যাব পরিচয়ে যারা এসেছিল, তারা সোহাগের সঙ্গে তার সহপাঠী এক ছাত্রীর বিষয়ে কথা বলেছে। তবে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি সোহাগের মা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান হিমেল বলেন, “আমরা ঘটনা শুনেছি। দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ নিতে বলেছি। দলের কারও সঙ্গে সোহাগের মনোমালিন্য হয়েছে বলে শুনিনি।” অবশ্য সোহাগকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ খবর পাননি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বেগ। এ ঘটনায় সোহাগের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন জানিয়ে রাজপাড়া থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমরা এখনো তার খোঁজ পাইনি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” আর র্যাব-৫ এর উপ অধিনায়ক মেজর সালাম বলেছেন, তাদের কোনো দল সোহাগকে গ্রেপ্তারে অভিযানে যায়নি। “ওর বাবা আমাদের অভিযোগ দিয়ে গেছেন। আমরা সোহাগের ফোন নম্বর রেখেছি, ট্র্যাক করে দেখার চেষ্টা করছি আসলে কী হয়েছে।” শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সোহাগের বাবা বলেন, “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ছেলে যদি অপরাধ করেও থাকে, তাহলে তাকে আদালতে সোপর্দ করে আইনের আওতায় আনা হোক।”
সূত্র টাইম নিউজ বিডি