সন্ত্রাস বিরোধী সৌদি আরবের নতুন সামরিক জোটে বাংলাদেশ
প্রবাস ডেস্ক ঃ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘ইসলামিক সামরিক জোট’ গঠন করেছে সৌদি আরব। এই জোটের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের সংবাদ সংস্থা আল আরাবিয়া ও আরব নিউজ। মঙ্গলবার সে দেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও এ খবর প্রকাশিত হয়। প্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্রে ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার পর সৌদির নেতৃত্বে এই জোটের ঘোষণা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সৌদি রাজধানী রিয়াদ থেকেই জোটের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। টেলিভিশনে প্রচারিত এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোট গঠনে সম্মত হয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষস্থানীয় ৩৪টি দেশ।’
নতুন জোটের সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- সৌদি আরব, জর্দান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বেনিন, তুরস্ক, চাদ, টোগো, তিউনেশিয়া, জিবুতি, সেনেগাল, সুদান, সিয়েরালিয়ন, সোমালিয়া, গেবন, কগেনিয়া, ফিলিস্তিন, কমোরোস, কাতার, কোট ডি আইভরি, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মালয়েশিয়া, মিশর, মরক্কো, মৌরতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া ও ইয়েমেন। এ জোটের সদর দপ্তর হবে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ। এ সম্পর্কে সৌদি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘নতুন এই সামরিক জোট ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, মিশর ও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।’ তবে বিশ্বের বিভিন্ন পরাশক্তিধর দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া এ জোট সিরিয়া বা ইরাকের মতো দেশগুলোতে কোনো অভিযান চালাবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমরা সম্পূর্ণ বৈধভাবে ওইসব দেশগুলোতে অভিযান চালাবো।’ কেবল আইএস নয়, অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও এই জোট লড়াই চালাবে বলে উল্লেখ করেছেন সৌদি যুবরাজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পড়বে আমরা তাদেরই ধ্বংস করার চেষ্টা করবো।’ গতবছর থেকে আইএসের বিরুদ্ধে ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সিরিয়ায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। সৌদি আরব ইতিমধ্যে ইয়েমেনে ইরানের সমর্থন পুষ্ট হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। গত মার্চ থেকে ইয়েমেনে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট। তবে তাদের এ হামলা ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ বন্ধে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। এদিকে ইসলামিক স্টেটের মতো গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বর্তমানে বেশ কয়েকটি জোট রয়েছে। আমেরিকান নেতৃত্বাধীন জোটে ৬৫টি দেশ রয়েছে। যদিও খুব কম দেশই সক্রিয়ভাবে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে সক্রিয় সামরিক ভূমিকা নেয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপও রয়েছে।