পৌর নির্বাচন নিয়ে রহস্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের আচরণের উপর নির্বাচন কমিশন যে বিধি নিষেধ দিয়েছে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে রহস্য রয়েছে।’ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ দলের পক্ষে এমন মন্তব্য করেন। রুহল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রীয় সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনসত্তা দান করেছে দেশের সকল পর্যায়ের নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিজেরাই নিজেদের স্বাধীনতা বিক্রি করে দিয়েছে ক্ষমতাসীনদের আগ্রাসনের কাছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের সার্বভৌম কর্তৃত্ব বিলিয়ে দেয়ার কারণেই কমিশনের নির্দেশনা পাত্তা দিচ্ছে না রিটার্নিং অফিসার, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।’ রিজভী বলেন, নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িকসহ সংঘাত-সন্ত্রাসের বিভীষিকা নামিয়ে আনা হয়েছে। গুম, খুন, হাত পিছমোড়া বেঁধে নৃশংসভাবে ক্রসফায়ারসহ সকল বিচারবহির্ভুত হত্যার দৃশ্যদৃশ্যান্তর জমে উঠেছে প্রতিদিন। এতে আশঙ্কা আরো ঘণীভুত হয়েছে যে, নির্বাচনের দিন শাসকদলের মনের মতোই নির্বাচন হবে, ভোটারদের মনমতো নয়।’ বর্তমান সরকারকে ভোটারবিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার সৌজন্যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে শান্তি, স্বস্তি, সম্প্রীতির শব্দগুলো এখন আর প্রচলন নেই। তবে ক্ষমতাসীন দলের ল্যাবরেটরিতে উৎপন্ন সন্ত্রাস শব্দটি স্বমহিমায় বিরাজমান। রাষ্ট্র ও সমাজের সকল ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়ন বাড়তে বাড়তে দেশকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ধ্বংসস্তুপের দিকে।’ ‘অবৈধ ক্ষমতাসীনরা নিজেদের পৌষ মাস টিকিয়ে রাখতে গণতন্ত্রের সর্বনাশ ঘটিয়েছে’ এমন মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এদের লাগামহীন সন্ত্রাস ও সহিংসতার প্রতিভার জোরে দেশের সকল পর্যায়ের নির্বাচনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আওয়ামী ছত্রছায়ায়। এখানে জনমতের কোনো তোয়াক্কা করার দরকার হয় না। আগামী পৌর নির্বাচন গায়ের জোরে নিজেদের দখলে রাখার জন্য এখন থেকে তারা বুক ফুলিয়ে সন্ত্রাসের ঘোড়ায় চেপে বসেছে। পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতার মদমত্তে শাসকদলের এমপি, মন্ত্রী, নেতাকর্মীরা সাধারণ ভোটারদেরকে মানুষ বলে গণ্য করছে না। কারণ জনগণের ইচ্ছার দ্বারা তারা শাসিত নয় বলেই জনমতকে কেয়ার করছে না।’ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আগামী পৌর নির্বাচন নিয়ে আপনাদের এখন পর্যন্ত গৃহীত কোনো পদক্ষেপই মানুষের কাছে আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং সরকারি দুষ্কর্মের সাথী হিসেবে ইতিহাসে আপনাদের ভূমিকা এক ন্যাক্কারজনক অধ্যায় হিসেবে চিত্রিত হয়ে থাকবে।’ এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা, সহ-দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।