মোদির সফর কি ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা কমাবে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অঘোষিত এবং অপ্রত্যাশিত পাকিস্তান সফর সবাইকে চমকে দিয়েছে। আফগানিস্তান থেকে আচমকা লাহোরে গিয়ে মি. মোদি বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফের সাথে। এমন এক সময়ে এই সফরের ঘটনা ঘটলো যখন আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে দুটো দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ চরম আকারে পৌঁছেছে। এর আগে দুটো দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে এধরনের সাক্ষাতের ঘটনা ঘটলেও পাকিস্তানের জন্যে মি. মোদি সর্বশেষ এই সফরের বাড়িত তাৎপর্য রয়েছে। পাকিস্তানের ‘দ্য ডন’ পত্রিকার সম্পাদক আশাহার রেহমান বলেন এই ধরনের বৈঠক ১১ বছর পর হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন অটল বিহারী বাজপায়ী লাহোরে গিয়েছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে এর আগেও কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়েছে। সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনের সময়।
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বৈঠক হয়।
মি: রেহমান বলেন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে ধরনের সমস্যা রয়েছে সেটি শুধু দুই প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করে সমাধান করতে পারবেন না।
কারণ উভয় প্রধানমন্ত্রীর উপর তাদের নিজের দেশের ভেতরে নানাভাবে চাপ রয়েছে।
দু’টো দেশের মধ্যে অবিশ্বাসের একটি বড় কারণ আফগানিস্তান। লাহোরে যাবার আগে কাবুলে দেয়া এক ভাষণে নরেন্দ্র মোদি আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানকেই দোষারোপ করেছেন।
মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলার পর দুদেশের মধ্যে সন্দেহ আর অবিশ্বাস যেরকম চরমে পৌঁছেছিল, সেখানে পারস্পরিক আস্থা ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
দুদেশের মধ্যে এই অবিশ্বাস আর সন্দেহের পেছনে আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান ভারতীয় প্রভাবও একটা কারণ।
মিস্টার মোদি মাত্রই কাবুলে ভারতীয় সহায়তায় তৈরি এক নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করে ফিরছেন। আফগানিস্তানে আরও বহু অবকাঠামো প্রকল্পে বিপুল সহায়তা দিচ্ছে ভারত।
পাকিস্তান এ বিষয়টা মোটেই সুনজরে দেখছে না। আফগান সরকারের মতো ভারতেরও সন্দেহ, সেখানে তালেবান বিদ্রোহের অন্যতম মদতদাতা হচ্ছে পাকিস্তান।
ভারত মনে করে, আফগানিস্তানে তাদের যে প্রভাব, সেটা খর্ব করতেই তালেবানকে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান।
এই বৈঠকের মধ্যদিয়ে দুই বৈরী প্রতিবেশী অন্তত আলোচনার পথে ফিরে আসবে বলে মি: রেহমান মনে করেন।
মি: রেহমান বলেন , “ আমি খুব অবাক হবো না যদি বাইরের চাপে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই সাক্ষাতের ঘটনা ঘটে থাকে ।”
তিনি বলেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য সম্প্রসারণের পক্ষে। দু’টি দেশের মাঝে ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে শান্তির প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলে ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ নেতারা মনে করেন।
সূত্র: বিবিসি।