প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভুটান সফরে ৬ চুক্তি
স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল তিনদিনের ভুটান সফরে দুই দেশের মধ্যে ৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
আজ (সোমবার) বিকেলে মন্ত্রনালয়ের আনক্লস সভাকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
ছয় চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যমান, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, ভুটান কর্তৃক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-রুট ব্যবহার, পণ্যের মাননিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত এবং ভুটান কর্তৃক বাংলাদেশ দূতাবাস স্থায়ীভাবে নিমার্ণের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান সংক্রান্ত। ভুটান কর্তৃক বরাদ্দকৃত জমিতে প্রধানমন্ত্রী ভুটানের রাজার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিনদিনের সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এছাড়া তিনি থিম্পুতে অনুষ্ঠিতব্য ÒInternational Conference on Autism and Neurodevelopmental Disorders (ANDD 2017)” এ অংশগ্রহণ করবেন শেখ হাসিনা।
এ সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ গওহর রিজভী, সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন (প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে) এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকে দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি, যেমন নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জল-বিদ্যুৎ, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, আন্তঃযোগাযোগ তথা কানেকটিভিটি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, কৃষি ও বাণিজ্য সহজীকরণ সংক্রান্ত বিষয়াবলিতে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি অধিক গুরুত্ব পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ভুটান সফর করেছিলেন। পরবর্তীতে ২০১১ ও ২০১৩ সালে ভুটানের রাজা বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। গত ২০১৪ এর ডিসেম্বরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
ভুটান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৯ এপ্রিল ২০১৭ অনুষ্ঠিতব্য অটিজম সম্মেলনের (১৯-২১ এপ্রিল ২০১৭) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করবেন। এছাড়াও তিনি একই দিনে সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলে সভাপতিত্ব করবেন। উক্ত সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, এমপি, সহ বিশ্বের ৩১ টি দেশ হতে উচ্চ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকবৃন্দ, সরকারী কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, এনজিও ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং UNICEF, UNDP, UN WOMEN, IOM, UNESCO সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের আঞ্চলিক প্রধান ও প্রতিনিধি সমন্বয়ে আনুমানিক আড়াই শতাধিক অংশগ্রহণকারী যোগদান করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সূচনা ফাউন্ডেশন, এবিলিটি ভুটান সোসাইটি (ABS) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয় এ সম্মেলনে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ÒDeveloping effective and sustainable multi-sectoral programmes for individuals, families and communities living with Autism and Neurodevelopmental disorders”। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ অটিজম ও ¯স্নায়ুবিকাশ জনিত সমস্যার চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে সুসমন্বিত কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে।
সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।