খাদ্য অধিদফতরের ডিজি পদে পরিবর্তন হচ্ছে!
স্টাফ রিপোর্টার ঃ গত সোয়া এক বছরে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে তিন দফায় পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি এই পদে পরিবর্তনের নতুন একটি প্রস্তাব নাকচও করে দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরও এখন আবার একটি মহল ডিজি (মহাপরিচালক) পদে পরিবর্তনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি মহলটি তদবিরে এ বিষয়ে অনেকটাই এগোতে সক্ষম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।জানা গেছে, সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্য অধিদফতরের ডিজি পদে পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। এ ব্যাপারে সার-সংক্ষেপও তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রী ওই সার-সংক্ষেপ নিজের হাতে কেটে দেন এবং বলেন, ‘তিনি তো এসেছেন বেশিদিন হয়নি।এতো তাড়াতাড়ি পরিবর্তন কেন? তিনি তো ভালোই চালাচ্ছেন।’ কিন্তু, কিছুদিন না যেতেই এখন আবারো ডিজি পদে পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদফতরের ডিজি পদে বর্তমানে আছেন ফয়েজ আহমেদ। তিনি ইতিমধ্যেই খাদ্য অধিদফতরে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।কিন্তু, তাকে সরানোর জন্য একটি মহল শুরু থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছিলো। সেই চেষ্টারই অংশ হিসেবে কিছুদিন আগে সার-সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিলো।দেখা যাচ্ছে, খাদ্য অধিদফতরের ডিজি পদে যারা আসছেন কেউই ৭/৮ মাসের বেশি থাকতে পারছেন না। ইতিপূর্বে শুধুমাত্র একজন কর্মকর্তাই (আহমেদ হোসেন খান) রেকর্ড সময় অর্থাৎ প্রায় ৪ বছর এ পদে ছিলেন।ডিজি আহমেদ হোসেন খান খাদ্য অধিদফতর থেকে বদলি হন ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। এই পদে নিয়োগ দেয়া হয় মো. সরওয়ার খানকে।তিনি কয়েক মাস না যেতেই নানান কেলেংকারি বাধিয়ে ফেলেন। এতোটা নিম্নমানের গম আমদানি করেন যে, গোটা মিডিয়ায় এ নিয়ে হইচই বেধে যায়। সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। এক পর্যায়ে তাকে পরিবর্তন করে নিয়োগ দেয়া হয় অতিরিক্ত সচিব প্রণব চক্রবর্তীকে।১৯ মার্চ, ২০১৫ এই বদলির আদেশ জারি হয়। এ সময় খাদ্য অধিফতরের পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ ছিলো যে, প্রণব চক্রবর্তী এ পদে যোগ দিতে আগ্রহী হননি।ফলে ১৬ এপ্রিল, ২০১৫ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নতুন এক প্রজ্ঞাপনে তাকে পরিবর্তন করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়েজ আহমেদকে অধিদফতরের ডিজি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ফয়েজ আহমেদ এ পদে যোগ দেন।ইতিপূর্বের ডিজির গম কেলেংকারি সামাল দিতে গিয়ে তাকে অনেক বেগ পেতে হয়। তিনি এ পদে ইতিমধ্যে মোটামুটি সাফল্যও দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। অথচ এখনই আবার তাকে এই পদ থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, খাদ্য অধিদফতর একটি বিশেষায়িত এবং স্পর্শকাতর সংস্থা হিসেবে বিবেচিত। ভালোভাবে যাচাই-বাছাই না করে যে কাউকে এই অধিদফতরের শীর্ষ অর্থাৎ ডিজি পদে নিয়োগ দেয়া হলে সেটা সরকারের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ, এই পদের সঙ্গে গোটা সরকারের খাদ্য নিরাপত্তার মতো ম্পর্শকাতর বিষয় জড়িত।বেশিরভাগ কর্মকর্তার দ্বারাই এই পদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করা সম্ভবপর হয় না, যা ইতিপূর্বে অনেকবার প্রমাণিত হয়েছে।উপযুক্ত কর্মকর্তা না হলে যে কোনো মুহূর্তে গোটা সরকারকে বিপাকে পড়তে হতে পারে। সে কারণেই এই পদে নতুন নিয়োগের বিষয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।