প্রধান বিচারপতি সত্য কথা বলায় সরকারের গায়ে জ্বালা ধরেছে: রিজভী
স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রধান বিচারপতি সত্য কথা বলায় সরকারের এতো জ্বালা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসে সরকারের সত্য কথা সহ্য হয় না।
মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টনে ভাসানি ভবনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল খিলখেত থানার কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি হলেন শাসন বিভাগের কর্তা। আপনি জোর করে, ভোটারবিহীন ক্ষমতায় এসেছেন। কিন্তু আপনার গায়ে জ্বালা হচ্ছে যখন প্রধানবিচারপতি বলছেন যে দেশে আইনের শাসন নেই বিচার বিভাগের শাসন নেই। দেশে যদি সত্যিই শাসন থাকতো তবে আপনার গায়ে জ্বালা লাগতো না। গতকাল পার্লামেন্টের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখেছেন, উনি ক্রোধান্বিত হয়েছেন, প্রধান বিচারপতি বলে কি করে? রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতি বলবে না। এ দেশে আইনের শাসন কোথায়? কোথায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা?
সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকলে খালেদা জিয়ার মামলার বিচারে ১৪০ বার সময় পায় কিভাবে? এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ১৪০ বার সময় দিতে হবে কেনো? আপনি এদেশে বিচার বিভাগকে, নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করেন বলেই, আজকে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা বারবার বিচারপতির ওপর নো কনফিডেন্স দেয় তখন নিম্ন আদালতের বিচারক বলেন, আমরা নো কনফিডেন্স গ্রহণ করি না। কেন? তার কারণ তারা আপনার দ্বারা প্রভাবিত, আপনার ভয়ে কম্পিত। কারণ এর আগে এক মামলায় বিএনপির নেতাকে খালাস দেয়ার কারণে বিচারক বাংলাদেশে থাকতে পারেনি। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে আপনার ভয়ে।
তিনি বলেন, আপনি যে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করেন এই কথাটি প্রধান বিচারপতি বলেছে বলে আপনার গায়ে আগুন ধরে গেছে, আপনি জ্বলে ভস্ম হয়ে গেছেন। কারণ আপনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে তারা সমালোচনা সহ্য করে। কিন্তু আপনি সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না।
খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার নামে একই মামলা হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগের ওপর বন্দুক ধরে তার সব মামলায় খালাস নিয়ে নেন। তাহলে এটি কিসের শাসনের দৃষ্টান্ত? এটা কি আইনের শাসন? গণতন্ত্রের শাসন?
এসময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি চান দেশে আপনার শাসন কায়েক হোক। এর জন্য প্রধান বিচারপতি সত্য কথা, ন্যায়ের কথা বললে আপনি তাকে ধমক দেন। আপনি সর্বোচ্চ আদালতগুলোর ওপর কর্তৃত্ব ফলাতে পারছেন না বলেই এতো উষ্মা, এতো ক্রোধ। এই কারণেই আপনি ধমক দিচ্ছেন।
মহিলা দলের নেত্রীদের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, মহিলা দল যেভাবে দলকে সম্পৃক্ত করছে এতে বিএনপির মহিলা দল বিএনপিকে সমৃদ্ধ করবে।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর মহিলাদল উত্তরের সভাপতি পেয়ারা মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক আমিনা খাতুন প্রমুখ।