সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আ.লীগের পরাজয় অবধারিত: মওদুদ
স্টাফ রিপোর্টারঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের পরাজয় অবধারিত। আর এ জন্যই সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। তবে আগামীতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে। কোনো একদলীয় নির্বাচন আর হবে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত ভিশন-২০৩০: আগামী দিনের রাজনীতি আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের পরাজয় অবধারিত। আর এ জন্যই সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। তবে আগামীতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে। কোনো একদলীয় নির্বাচন আর হবে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া বনানীতে দ্যা রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণে সরকারের কোনো না কোনো প্রভাবশালী মানুষের সমর্থন ও মদদ আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে, দিনে অন্তত ১২টি খুন হচ্ছে। বনানী দ্য রেইনট্রি হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণ, এই হোটেলের মালিক কে সেটা সবাই জানেন। প্রত্যেকটি অপরাধের সাথে তারাই জড়িত যারা অপরাধ করে। কিন্তু যত অপরাধ বাংলাদেশে হচ্ছে, প্রতিটি অপরাধের সাথে সরকারের কোনো না কোনো প্রভাবশালী মানুষের সমর্থন ও মদদ আছে। এই দুই ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনার বিষয়টি আরা বেশী প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে, কেনো? নিজেই এমন প্রশ্ন রেখে মওদুদ আহমদ বলেন, পুলিশকে বলা হয়েছে, বিরোধী দলকে পেটাও, তাদের কোনো জনসভা করতে দেবে না। আমরা আজ কোনো জনসভা করতে পারি না। কিন্তু তারা বলে, বিএনপি না কী নাই! আমি সরকারকে বলতে চাই, বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় এবং যেকোনো উপজেলা বিএনপিকে জনসভা করতে দেন, আর আপনারও করেন। দেখেন, কাদের জনসভায় বেশী মানুষ হয়? পুলিশকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং নিজেদের রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন মওদুদ আহমদ।
বিএনপি যেকোনো সময় নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচনে জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এর জন্য আমরা বলেছি, সরকার সহায়ক সরকারের কথা। এটা যেকোনো নামেই হতে পারে। যাদের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ থাকবে না।
সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, ক্ষমতায় এলে আমরা হীনমন্যতা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি করবো না। মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করেই আমরা প্রশাসনকে সাজাবো। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পশাসনের কোনো পদে কাউকে অধিষ্ঠিত করা হবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রশাসনকে মেধাহীন করে দিয়েছে। অর্থাৎ তাদের কাছে মেধার কোনো মূল্যায়ণ নেই।
‘ভিশন-২০৩০’ তে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথা উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতি কে, প্রধানমন্ত্রী কে, কে মন্ত্রী এবং কে এমপি। এসব ব্যক্তি সাধারণ মানুষের তুলনা করেন। বলেন, আপনার কোনো ক্ষমতা নেই, আমার সব ক্ষমতা। এটাকে আইনের শাসন বলে না। আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। কারণ ব্যক্তির উর্দ্ধে আইন।
‘বিচার বিভাগ স্বাধীন’- আওয়ামী লীগ নেতাদের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিচারকরা স্বাধীন কী না, এটা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। ক্ষমতায় এলে আমরা এই প্রশ্নগুলোকে বিতাড়িত করবো। তবে প্রধানবিচারপতির প্রশংসা করতে হয়। তিনি চেষ্টা করছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। তার এই প্রচেষ্টা সফল হোক এটাই আমরা চাই।