ভারতে সংখ্যালঘুদের জোর করে ধর্মান্তর করছে আরএসএস
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতে সংখ্যালঘুদেরকে চাপে ফেলে দলে নাম লেখানোসহ ধর্মান্তর কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। এবার উত্তরপ্রদেশের আরো সাত শতাধিক মুসলিমকে ধর্মান্তরের চেষ্টা করছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনটি।
যদিও আরএসএসের দাবি, গত দুমাসে সাত শতাধিক মুসলিম আরএসএসে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে প্রায় ২০ জন মুসলিমকে ধর্মান্তর করেছে আরএসএস। কথিত ‘ঘর ওয়াপসি’ (ঘরে ফেরা) করা মুসলিমদের আর্য সমাজ এবং আরএসএসের এক নেতার আয়োজনে বিশেষ পুজোর পরে তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়।
যদিও আর্য সমাজ এবং আরএসএস নেতাদের দাবি, সকলেই স্বেচ্ছায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাদের উপরে কোনো চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। ইউপি নির্বাচনে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর থেকেই কৌশলে মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের হিন্দু ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করছে সংগঠনটি। এর আগে ঝাড়খণ্ডে উপজাতি সম্প্রদায়ের ৫৩টি পরিবারকে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তর করে আরএসএস।
ঝাড়খণ্ডে প্রচুর উপজাতি মানুষের বাস। সম্প্রতি আদমসুমারির তথ্যে জানা গেছে, সেখানে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৬৭.৮ শতাংশ হিন্দু এবং ৪.৩ শতাংশ খ্রিস্টান।
আরএসএস-এর দাবি, ক্রমে সে রাজ্যা খ্রিস্টানের সংখ্যা বাড়ছে। উপজাতি মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে গোপনে ধর্মান্তরণ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে মিশনারিরা। সেই সব ধর্মান্তরিত মানুষদের তাদের মূল ধর্মে ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য বলে জানিয়েছে আরএসএস।
এর আগে ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় ৫৭ জন মুসলিমের কথিত ‘ঘর ওয়াপসি’ করাকে কেন্দ্র করে সেসময় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সংসদেও সেসময় বিরোধীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হন।
দিকে আরএসএসের কর্মকর্তাদের দাবি, বহু মুসলিম আরএসএসের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইছে ও এরপর ওই সংগঠনে যোগ দেয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তিন শতাধিক মুসলিম সদস্য বর্তমানে আরএসএসের হয়ে কাজ করছে।
আরএসএস কর্মকর্তারা আরো জানান, শহরে কিংবা গ্রামে সব ধর্মের মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করছে আরএসএস। এছাড়া গত তিন বছরে আরএসএসের সদস্য সংখ্যা বহুগুন বেড়েছে বলেও দাবি করা হয়। এছাড়া গত তিন বছরে বেড়েছে আরএসএস শাখা। মহিলা সদস্যের সংখ্যাও বাড়ছে বলে দাবি করা হয়েছে।
বিভাগ প্রচারক মনপজন কুমার জানিয়েছেন, মুসলিমরা এই সংগঠনে যোগ দিয়ে কাজ করতে চাইছে। তারা নিয়মিত শাখাগুলোতেও যাচ্ছে।
কামারান আহমেদ নামে একজন আরএসএস সদস্য জানান, আরএসএসের প্রতি মানুষের ধারণা পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায় এই সংগঠনের হয়ে কাজ করতে উৎসাহিত হচ্ছে।