সব

মিয়ানমারকে ৪৯টি ইয়াবা কারখানা বন্ধের অনুরোধ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 22nd August 2017at 4:35 pm
37 Views

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ মাদক ইস্যুতে মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনে তৃতীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সোমবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ৪৯টি ইয়াবা কারখানা (ল্যাবের) তালিকা দেয়া হয়েছে। এবং সেগুলো বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তুলে ধরা হয়েছে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ার ভয়াবহ চিত্রও। পাশাপাশি ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য পাচার বন্ধে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার অনুরোধও জানিয়েছে ঢাকা।
ওই বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেয় সেন্ট্রাল কমিটি ফর ড্রাগ অ্যাবিউজ কন্ট্রোল (সিসিডিএসি) এবং বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

অন্যদিকে আগের বৈঠকগুলোতে ইয়াবা ইস্যুতে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা কোনো বক্তব্য না দিলেও এবার তাঁরা কথা বলেছেন। ইয়াঙ্গুন প্রতিনিধিরা ইয়াবা প্রতিরোধে কী ধরনের কাজ করছেন, এর একটি তথ্যচিত্রও উপস্থাপন করেছেন। তবে রীতি অনুযায়ী বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের বিষয়টি আগের মতো এবারও এড়িয়ে গেছেন ইয়াঙ্গুন প্রতিনিধিরা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

ডিএনসির পরিচালক (অপারেশনস ও গোয়েন্দা) ডিআইজি সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘আজ সন্ধ্যায় আমরা দেশে ফিরেছি। বৈঠক ভালো হয়েছে, এটুকু এখন বলতে পারি। পরে ডিজি স্যার হয়তো ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানাবেন। ’

বৈঠক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের চিঠি চালাচালি ও কূটনৈতিক তৎপরতার পর গত শনিবার ডিএনসির মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি দল মিয়ানমার যায়। ওই দলে ডিএনসির কর্মকর্তারা ছাড়াও পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ইয়াবা তৈরি ও পাচার বন্ধ করতে বছরের পর বছর সে দেশের কাছে অনুরোধ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সিসিডিএসির কাছে পাঁচ বছর আগে তালিকা দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করছে ডিএনসি। দুই বছর আগে হালনাগাদ তালিকা দেওয়া হয়।

ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি) এবং বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিকাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিমসটেক) মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে ইয়াবা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে দুই দেশের পারস্পরিক সহায়তা চুক্তির কারণে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক বা ‘বাই লেটারাল টক’ বিশেষভাবে গুরুত্ব বহন করে। কারণ এটি কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে হয়। সব ধরনের মাদকদ্রব্য প্রবেশ বন্ধ ও চোরাচালান ঠেকাতে ১৯৯৪ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ইয়াবার প্রদুর্ভাব শুরু হলে বাংলাদেশ চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে তাগাদা দিতে থাকে। কিন্তু দেশটি তেমন আগ্রহ দেখায়নি। প্রায় ১৭ বছর পর ২০১১ সালের ১৫-১৬ নভেম্বর মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে দুই দেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রথম বৈঠকে মিলিত হয়। সেখানেই প্রথম মিয়ানমারকে তাদের সীমান্তে ইয়াবা ল্যাবের ব্যাপারে জানান ঢাকার প্রতিনিধিরা। তখন ইয়াঙ্গুন অভিযোগ আমলেই নেয়নি। ২০১৩ সালে ৪৩টি এবং ২০১৪ সালে হালনাগাদ করে ৩৭টি ল্যাবের তালিকা দেয় ডিএনসি। সিসিডিএসি সম্মত হওয়ায় দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় ২০১৫ সালের ৫ ও ৬ মে, ঢাকায়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ৪৫টি ইয়াবা ল্যাবের তালিকা দেওয়া হয়। তবে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা সেসব ল্যাবের অস্তিত্ব মেনে নেননি। ওই বৈঠকের শেষ দিন যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেননি ইয়াঙ্গুন প্রতিনিধিরা। দুই বছর ধরে ইয়াবা ল্যাব বন্ধ করাসহ সার্বিক বিষয়ে সহায়তা চেয়ে মিয়ানমারকে নিয়মিত চিঠি দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এর সূত্র ধরে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সিসিডিএসি বাংলাদেশের ডিএনসিকে তৃতীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায়। চলতি মাসেই ২০ আগস্ট তারিখ নির্ধারিত হয়।


সর্বশেষ খবর