সব

বৃষ্টির মধ্যেও কমলাপুরে উপচেপড়া ভিড়

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 22nd August 2017at 4:37 pm
50 Views

স্টাফ রিপোর্টারঃ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির শেষ দিনে আজ। তাই সকালে বৃষ্টির মধ্যেও কমলাপুরে টিকেট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই টিকেট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন।

মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে কমলাপুর স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। আজ দেওয়া হয়েছে ৩১ আগস্টের টিকিট।

রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জানিয়েছেন, বন্যার কারণে ট্রেনের সিডিউল বাতিল করা হলে যাত্রীদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। সকাল থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনের প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই টিকেট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এরমধ্যে অনেকেই মধ্য রাতে এসে দাঁড়িয়েছেন। কেউ এসেছেন ভোরে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এদিন দেয়া হয়েছে ২৮ অগাস্টের টিকেট।

এবার কোরবানির ঈদে তিন দিনের সরকারী ছুটি শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। আগের দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় সেদিনের টিকেটের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। শনিবার ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের ২২ হাজার ৪৯৬টি টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। ৩৫ ভাগেে কাটার জন্য সংরক্ষিত রেখে বাকি টিকেট কাউন্টার থেকে পাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঈদের বিশেষ ট্রেনের ২ হাজার ৬০৬টি টিকেটও কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। টিকেটের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের সারি টার্মিনাল ভবন ছাড়িয়ে স্টেশনের প্রবেশপথ পর্যন্ত চলে আসে।

টিকিট নিতে গতকাল বিকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন হাজারো টিকিট প্রত্যাশী। আবার অনেকে মধ্যরাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ভোরের আগেই টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন পৌঁছে যায় রাস্তা অবধি। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে আঁকাবাঁকা দীর্ঘ লাইন। লাইন টার্মিনাল ভবন ছাড়িয়ে স্টেশনের প্রবেশপথ পার হয়ে গেছে।

উত্তরবঙ্গেও ট্রেনের টিকেট কাউন্টারে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। এসব ট্রেনের টিকেটের জন্য শুক্রবার দুপুর থেকেই লোকজন কাউন্টারের সামনে ভিড় করেন। রাজশাহীর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটের জন্য শুক্রবার দুপুর ২টায় কমলাপুরে আসা মাদ্রাসা ছাত্র মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ কাঙ্খিত টিকেট পেয়ে বেশ খুশি।

রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট নিতে এসেছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রকিব। তারা তিন বন্ধু একসঙ্গে বাড়ি যাবেন বলে আগাম টিকিট নিতে এসেছেন। আবির জানালেন, আজ ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়ার শেষ দিন। আমরা তিন বন্ধু একসঙ্গে বাড়ি যাব। এজন্য গতকাল বিকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছি। তিন বন্ধুই পালাক্রমে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। তারপরেও এখনো শতাধিক মানুষের পেছনে রয়েছি। তবে আশা করি টিকিট পাবো।

কমলাপুর রেল স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন রংপুর এক্সপেসের আরেক টিকিট প্রত্যাশী শফিকুল। তিনি বলেন, রাত আটটার দিকে লাইনে দাঁড়িয়েছি। কাল প্রচুর গরম থাকায় অস্থির হয়ে গেছি। সকালে বৃষ্টি হওয়ায় এখন একটু আরাম লাগছে। এতো কষ্টের পরও যদি টিকিট পাই, তাহলে এমন কষ্টকে কষ্টই মনে হবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল আটটার আগেই টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড়ে কানায় কানায় ভরে যায় কমলাপুর স্টেশনের কাউন্টার। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিটের অপেক্ষায় থাকা লোকজন একটু পর পরে উচ্চস্বরে আনন্দ করতে। তারা অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে গল্প জমে তুলেছেন।

তবে কোনো সমস্যা যেন না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক তৎপর রয়েছেন।

কমালাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, টিকেট প্রত্যাশীরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কিনতে পারছেন। কোনো যাত্রী এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ জানাননি। বেশিরভাগ মানুষ টিকেট নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন। এসি টিকেটের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকের চাহিদা থাকে এসি টিকেটের। কিন্তু সংখ্যায় কম হওয়ায় আমরা চাহিদা পূরণ করতে পারি না। এজন্য না পাওয়ার অভিযোগ যাত্রীদের।

তিনি জানান, কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৩১টি ট্রেনের ২২ হাজার ৪শ ৯৬টি টিকেট বিক্রি করা হবে। ক্রমান্বয়ে ২০, ২১ ও ২২ আগস্ট যাত্রীরা যথাক্রমে ২৯, ৩০ ও ৩১ আগস্টের অগ্রিম টিকেট কাটতে পারবেন।


সর্বশেষ খবর