সব

৭ খুনে নূর হোসেন-তারেক সাঈদসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 22nd August 2017at 10:00 pm
41 Views

স্টাফ রিপোর্টারঃ বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলার রায়ে সাবেক র‍্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, কাউন্সিলর নুর হোসেন, এমএম রানা, এবং আরিফসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।

বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৬ জনের মধ্যে বাকি ১১ জনের সাজা কমিয়ে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া বিচারিক আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া ৯ জনের দণ্ডও বহাল রাখেন হাইকোর্ট ।

মৃত্যুদণ্ড বহাল যাদের: সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ১১-এর চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত কমান্ডার এম এম রানা, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ হোসেন, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এবি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, সৈনিক বেলাল হোসেন, সৈনিক আল আমীন, আবু তৈয়ব আলী, মো. শিহাবউদ্দিন, পূর্ণেন্দু বালা, আবদুল আলিম, মনিরুদ্দিন মুন্সী ও তাজুল ইসলামের ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

মৃত্যুদণ্ড কমে যাবজ্জীবন হলো যাদের: আসাদুজ্জামান নূর, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাজাহান ও জামাল সরদারের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তরা হলো: অপহরণের দায়ে ১০ বছর কর্পোরাল রুহুল আমিন, আলামত সরানোর দায়ে ৭ বছর এএসআই বজলুর রহমান, আলামত সরানোর দায়ে ৭ বছর হাবিলদার নাসির উদ্দিন, অপহরণের দায়ে ১০ বছর এএসআই আবুল কালাম আজাদ, অপহরণের দায়ে ১০ বছর সৈনিক নুরুজ্জামান, অপহরণের দায়ে ১০ বছর কনস্টেবল বাবুল হাসান, অপহরণের দায়ে ১০ বছর কর্পোরাল মো. মোখলেছুর রহমান (পলাতক), অপহরণের দায়ে ১০ বছর এএসআই কামাল হোসেন (পলাতক), অপহরণের দায়ে ১০ বছর ও আলামত সরানোর দায়ে ৭ বছর কনস্টেবল হাবিবুর রহমান (পলাতক)।

এর আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কার্যকরের অনুমতি (ডেথ রেফারেন্স) এবং আসামিদের আপিল শুনানি শেষে ২৬ জুলাই আদালত রায়ের জন্য ১৩ আগস্ট দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিন রায় ঘোষণা করা হয়নি। পরে আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিলেন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ৩ দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দু’টি মামলা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে র‌্যাবের ৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তার আগে ৩ জনকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত নেয়া হয় এবং তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

একসঙ্গে দুই মামলার বিচার শেষে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৈয়দ এনায়েত হোসেন। সেনাবাহিনীর বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ওই রায়ে। ৩৫ জন আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে গ্রেফতার ও আত্মসমর্পণ করে কারাগারে থাকা ২০ জন নিয়মিত ও জেল আপিল করেন। এছাড়া নিন্ম আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য নথিও ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা এবং এরপর প্রধান বিচারপতি আলোচিত এ মামলার শুনানির জন্য ১৭ মে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। ২২ মে শুনানি শুরু হয়।

৩৩ কার্যদিবসের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমএ মান্নান্ন মোহন ও জাহিদ সরওয়ার কাজল এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।আসামিপক্ষে ছিলেন- আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এসএম শাহজাহান, এহসান উল্লাহ প্রমুখ।


সর্বশেষ খবর