নড়াইলে যুবক হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা
উজ্জ্বল রায়ঃ গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) নড়াইলের কালডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আজমল হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) নিহতের চাচাতো ভাই বনগ্রামের বাসিন্দা হায়াতুর মোল্যার ছেলে পাভেল মোল্যা বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কালিয়া থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলাটি দায়ের করতে বাধ্য হয়েছেন বলে বাদীর অভিযোগ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের কালিয়া উপজেলাধীন বনগ্রামের বাসিন্দা ও ১২ নং চাঁচুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের বড় ছেলে প্রিন্স মোল্যাকে ১ নং আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও সোহেল (২৮), পিং- মশিয়ার মোল্যা, মশিয়ার মোল্যা (৫৬), পিং- মৃত দলিল উদ্দিন, সর্ব সাং- বনগ্রাম, মিকান মোল্যা (৪২), তারেক মোল্যা (৩৮), উভয় পিং- মৃত আকছির মোল্যা, সাইফুল শেখ (৩৭), পিং- কোবাদ শেখ, তরিকুল মোল্যা (৩২), পিং- মৃত হাশেম মোল্যা, আসলাম মোল্যা (৪০), আলবর্দ্দি মোল্যা (৪৭), উভয় পিং- মৃত মাহমুদ মোল্যা, লাভলু ফকির (৩৭), পিং- তকব্বর ফকির, তকব্বর ফকির (৫০), পিং-ইরুজ ফকির, সর্ব সাং- কালডাঙ্গা কে ও আজমলকে হত্যার অভিযোগে এ মামলার আসামি করা হয়েছে। এজাহারে আরও জানা যায়, গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে অভিযুক্ত মিকান মোল্যা মোবাইল ফোনে নিহত আজমলকে স্থানীয় আটলিয়া মোড়ে আসার কথা বলে। কিছু সময় পর আজমল ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা মশিয়ার মোল্যার নেতৃত্বে আজমলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সর্ব প্রথম প্রিন্স মোল্যা আজমলকে খুন করার উদ্দেশ্যে গলায় কোপ মারে। এরপর আসামি মিকান মোল্যা তার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আজমলের শরীরে গুরুতর আঘাত করে। মাটিতে লুটিয়ে
পড়ে থাকাকালীন অবস্থায় মশিয়ার মোল্যা গাছি দা দিয়ে আজমলকে কোপ মারে। আসামি
তারেক ছ্যান দা দিয়ে আজমলের পিঠে কোপায়। তারপর আসামি আসলাম, আলিবর্দ্দি, লাভলু,
তকব্বর মিলে তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আজমলের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত
করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী আজমলের চিৎকারে কালডাঙ্গা গ্রামের আলীজান ফকিরের ছেলে
মান্নান ফকির, ওলিয়ার ফকিরের ছেলে নবীর ফকির, বনগ্রামের মৃত তবিবর মোল্যার ছেলে
হায়াতুর মোল্যা, কালডাঙ্গা গ্রামের ছিরার ছেলে ইলিয়াস, আটলিয়া গ্রামের মাজেদ মোল্যার ছেলে লাকী মোল্যা, বনগ্রামের মৃত তবিবর মোল্যার ছেলে ওবায়দুর মোল্যা এগিয়ে গেলে আসামিরা আজমলকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা আজমলকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নড়াইল সদর থানার উপ-পরিদর্শক নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতের পর লাশ ময়নাতন্ত করা
হয়েছে। অতঃপর দাফন-কাফন শেষে নিহতের পরিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলে আসামিগণ
তাদেরকে হত্যার হুমকি প্রদান করে এবং গৃহবন্দি করে রেখেছে। আসামিরা এলাকার নিরীহ
জনগণের উপর এ খুনের বোঝা চাপানোর পায়তারা করছে এবং বিভিন্ন মহলে তদবির করছে
বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া হত্যা মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করার অঙ্গীকার দিয়ে এলাকার
সাধারণ জনগণের নিকট থেকে চাঁদা দাবি করছে। লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে একাধিক।
অবশেষে থানায় মামলা না হওয়ায় কোনো উপায়ান্তর না দেখে নিহতের চাচাতো ভাই
স্বপ্রণোদিত হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারের
কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।