ঈদ আনন্দকে ভাগ করে এক কাতারে নিতে হবে: খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টারঃ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ঈদের আনন্দকে ভাগ করে নিতে হবে এক কাতারে মিলে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন এক বাণীতে এসব কথা বলেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাঁর বাণীতে বলেন, ‘ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত প্রতিবছর ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। স্বার্থপরতা পরিহার করে মানবতার কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা কোরবানির প্রধান শিক্ষা। হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-ক্রোধকে পরিহার করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিবেদিত হওয়া আমাদের কর্তব্য। কোরবানির যে মূল শিক্ষা, তা ব্যক্তিজীবনে প্রতিফলিত করে মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ সম্ভব। বিশ্বাসী হিসেবে সে চেষ্টায় নিমগ্ন থাকা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য চলছে। মানুষের জান, সহায়-সম্পদের কোনো নিরাপত্তা নেই। ঈদের প্রাক্কালে বেশ কয়েকটি গুমের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভয়াল অন্ধকার উৎসবের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। দেশের বর্তমান অবস্থায় সবার পক্ষে ঈদের আনন্দ যথাযথভাবে উপভোগ করা সম্ভব হবে না। এদিকে চাল, ডাল, লবণ, পেঁয়াজ, মরিচসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি দরিদ্র ও কম আয়ের মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ আরো বিপন্ন হয়ে পড়বে। পানি, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের তীব্র সংকট, সড়ক ও মহাসড়কের বেহাল অবস্থা জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে।
এবার একের পর এক হাওরে বন্যা, পাহাড়ধস ও সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলসহ দেশের ২৭টি জেলায় ভয়াবহ বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেকেই স্বজন হারিয়েছে, ঘরবাড়ি, জোত-জমিসহ সহায় সম্পদ বানের পানিতে ভেসে গেছে। এখনো ভেসে যাওয়া বসতবাড়ির শূন্য ভিটায় ঠাঁই করতে পারেনি হাজারো মানুষ। তাই আমি বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশের সব বিত্তবান ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের আহ্বান জানাই-প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্গত অসহায় মানুষের দিকে সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করার জন্য। ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে-সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের ঈদের আয়োজনে উপদ্রুত অসহায় মানুষ যেন অংশগ্রহণ করতে পারে সেই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ঈদের আনন্দকে ভাগ করে নিতে হবে এক কাতারে মিলে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘ঈদুল আজহা সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি, সমাজে সৃষ্টি হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের মেলবন্ধন, মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে এই প্রার্থনা জানাই।’
বিএনপি মহাসচিবের বাণী: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর বাণীতে বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করি।
আল্লাহতায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হওয়াই কোরবানির মর্মবাণী। কোরবানির সে শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা আমাদের কর্তব্য। স্বার্থচিন্তা পরিহার করে মানবকল্যাণ এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে।
ঈদুল আজহা সকলের জীবনকে করে তুলুক আনন্দময়, মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে আমি এ প্রার্থনা জানাই।’ বলছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।