ইরানি নওরোজ ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠান
আমারবাংলা ডেস্কঃ ইরানি নওরোজ (নববর্ষ) ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আজ শুক্রবার, ৬ এপ্রিল ২০১৮, বিকেল ৩.৪৫ মি. বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নাট্যকলা মিলনায়তনে ‘নওরোজের ঐতিহ্য ও নিদর্শন’শীর্ষক একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমির নাট্য ও চলচ্চিত্র বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক জনাব মো. বদরুল আনাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক জনাব ম হামিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম সরকার।
স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর জনাব সাইয়্যেদ মূসা হোসেইনী।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ আলোচনা পর্বের পর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল বাংলা ও ফারসি গান, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা ও ইরানি নববর্ষের প্রেক্ষাপটে বিশেষ নাটক। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল সমির বাউলের হৃদয়গ্রাহী বাউল গান। অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ইরানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিশুরা নওরোজের গান পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নতুন দিনের আগমনির সাথে সাথে প্রকৃতির পুনর্জাগরণ ও নতুন জীবনের যাত্রা শুরু হয়। নওরোজ বা নববর্ষ মানেই জরাজীর্ণতার অবসান এবং নতুন জীবনের শুরু। নওরোজ উৎসব উদ্যাপন কেবল নতুন বছরের উৎসব নয়। বরং এটি নতুন দিনের বিভিন্ন বিশ্বাস এবং মানবিক ও চারিত্রিক মূল্যবোধের বার্তাকে চিরজাগরুক রাখা ও একে সম্মান জানানোর এক অনন্য সুযোগও বটে। বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বন্ধু ও আপনজনদের সাথে সাক্ষাৎ, বড়দের সম্মান জানানো, পূর্বপুরুষদের স্মরণ, ক্ষমা ও উপহার, প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব এবং সর্বোপরি ভবিষ্যতের জন্য সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা নওরোজের এসব বার্তাই আজ বিশ্ব সমাজ ও মানবতার জন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি। তাই তো ২০০১ সালে জাতিসংঘে ইরানসহ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে ২১ মার্চ বসন্তের প্রথম দিনকে বিশ্ব নওরোজ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর ২০০৯ সালে এটি মানবতার সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক নিদর্শন হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
নতুন বছর বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম দুই দেশ ইরান ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য সম্মান ও মর্যাদা, উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সফলতা বয়ে আনবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।