রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় কৃষকরা
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি ঃ হাতেগোনা আর মাত্র এক মাস বাকি। এরপর সোনার ফসল সয়াবিন ঘরে তুলবেন কৃষকরা। তাই বাম্পার ফলনের আশায় ক্ষেতে ক্ষেতে আগাছা পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
কৃষকদের পাশা পাশি কৃষাণীরাও পরিচর্যার কাজ করছেন রোদে পুড়ে। চলতি রবি মৌসুমে ফসলের মাঠগুলোতে আগাছা পরিস্কারের কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকরা।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার সোনার ফসল সয়াবিনের বাম্পার ফলন হবে এমন প্রত্যাশা করছে এ উপজেলার কৃষকরা। এখানে সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার ব্যবস্থা থাকলে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকতো তেমনি চাষীরা সয়াবিনের ন্যায্য মূল্য পেত। এখানকার কৃষকরা সয়াবিন চাষ করে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানী, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করে থাকে। সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার পশ্চিম চরআবাবিল গ্রামের সয়াবিনের ক্ষেত গুলো ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে যেন সবুজের আবরণে ঢেকে রেখেছে সায়াবিন ক্ষেত। দক্ষিণা হাওয়ায় দুলছে সয়াবিনের গাছগুলো। গাছে সয়াবিনের ফুল ও সয়াবিন আসতে শুরু করেছে। আর পোকা মাকড় থেকে রক্ষা পেতে ফুটপাম্ব দিয়ে কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করছে কৃষকরা। অধিকাংশ কৃষকরা জানায়, খরচের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়ায় দিনদিন তারা সয়াবিন আবাদে আগ্রহী হয়ে পড়েছে এখানকার কৃষক। কৃষক- খায়রুল আমিন ছবি- সালাউদ্দিন সরদারজালিয়ারচরের কৃষক খায়রুল আমিন বলেন “এ বছর ৫০ হাজার টাকা খরচ করে সয়াবিনের আবাদ করেছি। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফসল হবে। তবে এখানে সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা থাকলে আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পরাতাম। এবার প্রায় তিন একর জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে সয়াবিন চাষ করেছেন তিনি। ভালো ফলনের আশায় পরিবারের লোকজন নিয়ে তিনি সয়াবিন ক্ষেতের আগাছা ও পোকা-মাকড় দমনের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।”উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সয়াবিনের তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে চাষ করা হয়েছে। এ উপজেলায় ৯ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ করা হয়েছে। প্রতি একর জমিতে সয়াবিন উৎপাদনে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। যার বিক্রয় মূল্য ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, জেলায় ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। এ সয়াবিন থেকে পুষ্টিকর খাবার সয়াদুধ, সয়ানাগের ও সয়াতপুসহ বিভিন্ন খাদ্য তৈরী হয়। সয়াবিন প্রকিয়াজাতকরণ কারখানার ব্যবস্থা করা হলে যেমন কর্মস্থানের সুযোগ হতো, তেমনি চাষীরা ন্যায্যমূল্য পেতো বলে জানান এ কৃষিবিদ।