একনেকে চার নদীর নব্যতা উন্নয়নসহ ১৫ প্রকল্প অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারসহ ১৫ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ২১৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৮ হাজার ৪৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৪৪৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪ হাজার ২৯০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা খরচ করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী বাহাদুরবাদের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র হতে উৎপন্ন হয়ে জামালপুর এবং ময়মনসিংহ জেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব বাজারে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নদীটির ২২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ১০০ মিটার প্রস্থ ব্যাপী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ৩ মিটার গভীর করে নৌপথটি ক্লাস-২নেভিগেশনাল রুটে উন্নতী করা হবে।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ধরলা একটি সীমান্ত নদী যা প্রকৃত পক্ষে ব্রহ্মপুত্রের উপ-নদী। নদীটি হিমালয়ের দক্ষিণ সিকিম থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে এবং লালমনির হাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে। নদীটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদীতে পতিত হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ধরলা নদীর সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যইে ৬০ কিলোমিটারে ৩৮ মিটার প্রস্থ ব্যাপী ড্রেজিং করা হবে।দিনাজপুর সেতাবগঞ্জের একটি বিল হতে উৎপন্ন তুলাই নদীটি ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে টাঙ্গন নদীর ভারতীয় অংশে মিলিত হয়েছে। এ নদীর ৭০ কিলোমিটাওে ৩৮ মিটার প্রস্থব্যাপী ড্রেজিং এর মাধ্যমে ১ দশমিক ৫ মিটার গভীর করে নৌপথটি ক্লাস-৪ নেভিগেশনাল রুটে উন্নীত করা হবে।
আজকের একনেকের অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্র, ধরলা,তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এছাড়া কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন (১ম পর্যায়) (তৃতীয় সংশোধিত), এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ২ হাজার ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। হাটহাজারী-ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি সড়ক উন্নয়ন (চট্টগ্রাম অংশ), খরচ হবে ৩৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ভূরুঙ্গামারি-সোনাহাট স্থলবন্দর-ভিতরবন্দ-নাগেশ্বরী মহাসড়কের দুধকুমর নদীর উপর সোনাহাট সেনাহাট সেতু নির্মাণ, খরচ ২৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপে¬ক্স নির্মাণ, খরচ ১০৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি ঘাটে গুঁড়ো দুদ্ধ কারখানা স্থাপন, ব্যয় ১০৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প, খরচ ২৮০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। মেঘনানদীর ভাঙ্গন হতে ভোলা জেলার সদর উপজেলাধীন রাজাপুর ও পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন রক্ষার্থে তীর সংরক্ষণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, খরচ ৩৪৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ, খরচ ১৫৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন(আরওএসসি)- দ্বিতীয় পর্যায় (দ্বিতীয় সংশোধিত), খরচ ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বিএফডিসি কমপ্লে¬ক্স নির্মাণ,খরচ ৩২২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন, খরচ ১৬৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন, গোপালগঞ্জ (প্রথম সংশোধিত) প্রকরেল্প খরচ হবে ২৫০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচের উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
ব্রি: দ্র: প্রকল্পগুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত প্রয়োজন হলে ই-মেইলের সাথে সংযুক্ত অন্য ফাইলগুলো দেখা যেতে পারে।