আইন না মানার সংস্কৃতি সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ: ডিএমপি কমিশনার
স্টাফ রিপোর্টারঃ সব পর্যায়ে আইন না মানার সংস্কৃতিই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) মিলনায়তনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকের সতর্কতা’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই ছায়া সংসদের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ছায়া সংসদে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি সরকারি দল ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি বেসরকারি দল হিসেবে অংশ নেয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা এই শহরে এ মুহূর্তে বার্নিং ইস্যু। এ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন হলো। এরপর আমরা ১০ দিনব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করেছি, গত সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে রাজধানীতে ট্রাফিক সচেতনতা মাস পালন করেছি। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকের ভূমিকা রয়েছে, কিন্তু একমাত্র চালকের সচেতনতায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, এর সঙ্গে যাত্রী-পথচারীদের সচেতনতা এবং ভৌত কাঠামো একটি বড় বিষয়। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনির যে স্থানে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছিলেন সে স্থানটি ছিল দেশের অন্যতম দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। সড়কের ওই স্থানটিতে বাঁক থাকার কারণে অপরপাশের যানবাহন দেখা যেত না।
পরবর্তীতে সড়কটিকে সোজা করা হয়, যার ফলে ওই স্থানের ৯৫ শতাংশ দুর্ঘটনা কমে গেছে। এ থেকে বোঝা যায়, ওই স্থানটিতে দুর্ঘটনার জন্য চালকরা দায়ী নয়, এর জন্য দায়ী ছিল সড়ক ইঞ্জিনিয়ারিং।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমাদের দেশের মহাসড়কগুলোকে সাধারণত আঞ্চলিক সড়ক বলা যায়। কারণ একই সড়কে দূরপাল্লার যানবাহন যেমন চলে; সেই সড়কেই নসিমন, করিমন, ভটভটি লক্কড়ঝক্কড় যান চলাচল করে।
একই সড়কে ৮০ কিলোমিটার গতির যানবাহন চলে আবার ৫ কিলোমিটার গতিরও যানবাহন চলে। এটিও মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
কিন্তু ওভারটেকিংয়ের কারণে যে দুর্ঘটনা ঘটে সেখানে চালকের অসচেতনতা, নির্বুদ্ধিতা ও অদক্ষতাই দায়ী। চালকদের প্রশিক্ষিত করার জন্য দেশে এখনো কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি এবং তাদের পর্যাপ্ত লাইসেন্স সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়নি, যা দুর্ভাগ্যজনক।
আইন না মানার সংস্কৃতি সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আইন না মানার সংস্কৃতিই সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। তাই দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিজে আইন মানা এবং অন্যকে আইন মানতে উদ্বুদ্ধ করার অনুরোধ জানান তিনি।
ছায়া সংসদে সরকারি দল সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকের সচেতনতার ওপর জোর দেন এবং এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করেন।
তবে বিরোধী দল এর বিরোধিতা করে শুধুমাত্র চালকদের সচেতনাতেই সড়ক দুর্ঘটনারোধ সম্ভব নয় বলে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। দুই দলের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারকরা বিরোধী দল অর্থাৎ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিকে বিজয়ী ঘোষণা করে।