সব

পরিকল্পিতভাবে দূতাবাসেই খুন করা হয় সৌদি সাংবাদিককে: তুরস্ক

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Sunday 7th October 2018at 11:18 am
112 Views

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তুরস্কে সৌদি দূতাবাসে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হওয়া সৌদি সাংবাদিককে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দূতাবাসের ভিতরেই বিশেষ ঘাতক টিম দ্বারা খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক।

দেশটির দুজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য জানায় ওয়াশিংটন পোস্ট। যে পত্রিকায় খুন হওয়া সৌদি সাংবাদিক খাশোগগি কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতেন।

দুইজন কর্মকর্তার একজন জানান, সৌদি সাংবাদিক খাশোগগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সৌদি দূতাবাসে প্রবেশের পর হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা ১৫ সদস্যের একটি ঘাতক টিম ছিল। যারা সৌদি থেকে তুরস্কে আসে মূলত তাকে হত্যা করার জন্য।

তবে এ বিষয়ে তুরস্কের এই দুই কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে নি।

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন জামাল খাশোগগি। আগামী মাসে হবু স্ত্রীকে বিয়ে করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে খাশোগগি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশ করেছিলেন। তার হবু স্ত্রীও সঙ্গে ছিলেন,কিন্তু তাকে খাশোগগির সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কনস্যুলেটে প্রবেশের আগে খাশোগগিকে মোবাইল ফোনও রেখে যেতে হয়েছে। অনেক দূতাবাস ও কনস্যুলেটে মোবাইল ফোন রেখে যাওয়ার রীতি অনুসরণ করা হয়।

সৌদি কনস্যুলেট বা দূতাবসে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ হন সাংবাদিক খাশোগগি। তার নিখোঁজের বিষয়ে তুরস্ক থেকে দাবি করা হয়, দূতাবাস থেকে সে আর বের হয় নি।

অপরদিকে সৌদি কনস্যুলেট থেকে বলা হয়, সাংবাদিক খাশোগগি দূতাবাসে কাজ সেরে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়।

নিখোঁজের পর গত সপ্তাহে ব্লুমবার্গে নিউজে দেয়া এক সাক্ষাতকারে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স সালমান দাবি করেন, গত মঙ্গলবার সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর খুব তাড়াতাড়ি বের হয়ে যায় সাংবাদিক খাশোগগি।

খাশোগগি দূতাবাস থেকে বের হওয়ার বিষয় সৌদি কনস্যুলেট থেকে দাবি করলেও সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ দেখাতে পারছেননা তারা।

অপরদিকে এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর কাউকে প্রবেশের অনুমতি সৌদি না দিলেও শুধুমাত্র ‘রয়টার্স নিউজ এজন্সিকে প্রবেশের অনুমতি দেয় এটা প্রমাণ করার জন্য যে সাংবাদিক খোশগোগি সেখানে নেই।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে তুরস্কে আসার আগে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন এই সাংবাদিক। সৌদি যুবরাজের ও দেশের কঠোর সমালোচক ছিলেন এই সাংবাদিক।

এক সময়ে সৌদি রাজপরিবারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা খাশোগগি গত বছর দেশ ছেড়ে যান। সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ওপর দমনাভিযান শুরুর পর দেশ ছাড়েন তিনি।

গত মার্চে সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, সৌদি আরবে বিতর্কের কোনও জায়গা নেই। সরকারের নীতিকে প্রশ্ন করলেই নাগরিকদের আটক করে কারাবন্দি করা হচ্ছে।

কাতার, কানাডা, ইয়েমেন যুদ্ধ এবং সংবাদকর্মীদের ওপর দমনাভিযান নিয়ে সৌদি নীতির কড়া সমালোচক ছিলেন জামাল খাশোগগি। ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে ভ্রমণ এবং সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি।

আফগানিস্তানে সোভিয়েত বিরোধী লড়াই নিয়ে লেখালেখি করতে তিনি ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে বিন লাদেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

১৯৯০ দশকের প্রথম দিকে তিনি বিন লাদেনের সঙ্গে সৌদি রাজপরিবারের বিরোধ মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। তাকে সুদান থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিজ দেশে ফেরার অনুরোধ জানালেও আল কায়েদা নেতা তা প্রত্যাখান করেন।


সর্বশেষ খবর