ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর
স্টাফ রিপোর্টারঃজাতীয় সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদিন সোমবার (৮ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে করে বিলটি আইনে পরিণত হলো।
সাংবাদিক, সম্পাদক ও সুশীল সমাজের তীব্র আপত্তির পরও বিতর্কিত বিভিন্ন ধারা বহাল রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিলটি জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর ২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) এ বিল সংক্রান্ত নথিতে স্বাক্ষর করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংক্রান্ত নথি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠানো হয়েছে। সংসদ সচিবালয় থেকে বুধবার নথিটি বঙ্গভবনে পাঠানো হয়।
সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদে কোনও বিল গৃহীত হলে তা সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ওই বিলে ১৫ দিনের মধ্যে সম্মতি প্রদান করবেন। অবশ্য তিনি চাইলে কোনও বিশেষ বিধান পুনর্বিবেচনা বা সংশোধনীর বিবেচনা অনুরোধ করে একটি বার্তাসহ সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন।
আইনটির সমালোচকরা বলছেন, এই আইনের কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের বাক স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। আইনটি অপপ্রয়োগের সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের তীব্র আপত্তি রয়েছে। এসব ধারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলে তারা আইনটি প্রণয়ণের উদ্যোগ থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই বিরোধিতা করেছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অংশ নিয়ে তারা সুনির্দিষ্ট ৮টি ধারায় আপত্তি করে তা সংশোধনেরও সুপারিশ করে।
তবে, আইন পাসের সময় সেই সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়নি বলে সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের থেকে আপত্তি তোলা হয়। আইনটির প্রতিবাদে তারা কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেন।
পরে তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গত ৩০ সেপেম্বর সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে আইনটি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আলোচনার আশ্বাস দেন। এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮ পাস হয়। পাস হওয়া বিলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের আলোচিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বাতিল করা হয়েছে। তবে ওই আইনটির ধারাগুলো নতুন আইনের বিভিন্ন ধারায় যুক্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে স্বাক্ষর না করতে রাষ্ট্রপতির প্রতি আহবান জানিয়েছিল সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে চিঠি দিয়ে তারা বিলটিকে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানোরও আহবান জানান। অনুরূপ আহবান জানিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।