“বাংলাদেশে দন্ত চিকিৎসা ও জনসচেতনতা”
AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Thursday 18th October 2018at 8:59 am
FILED AS: স্বাস্থ্য ও চিকিত্সা
124 Views
ডাঃ ফেমাস উদ্দিন চয়নঃ সাস্থ্য ব্যাবস্থার একটি বিশাল ও গুরুত্বপূর্ন অংশ হচ্ছে ডেন্টাল ট্রিটমেন্ট / দন্ত চিকিৎসা বিভাগ।
আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন দিক থেকে উন্নয়নের ছোয়া পেলেও, কেন জানি এই দন্ত চিকিৎসা বিভাগের ব্যাপারে জনগণের জ্ঞানের অভাবটুকু সেই আগের জায়গাতেই রয়ে যাচ্ছে।
অথচ একজন সাধারণ মানুষ হয়তো এটা জানেও না যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মানবদেহের চালিকা শক্তি হার্ট/হৃদপিন্ড সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংগের নানা রকম রোগের জন্য আমাদের দাতের প্রতি অযত্ন অনেকাংশেই দায়ী।
নিয়মিত দাঁতের যত্ন না নিলে মুখে রোগ জীবানুর সংক্রামণ ঘটে। এসব মারাত্বক জীবাণু আমাদের মুখের নানা রকম রোগ যেমন দন্ত-ক্ষয়,মাড়ি ফুলে যাওয়া,ঘা,পাল্পাইটিস থেকে শুরু করে মুখের ভিতরে ক্যানসার পর্যন্ত ঘটাতে সক্ষম।
ব্যাকটেরিয়া ফুলে যাওয়া মাড়ির ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে রক্তে প্রবাহিত হয়। এই বহিরাগত ব্যাকটেরিয়া প্রদাহ সৃষ্টি করে কারণ শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই হচ্ছে প্রদাহ সৃষ্টির মাধমে রক্তকে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করা। প্রদাহ রক্তনালীকে সংকুচিত করে ব্রেইন এবং হার্ট এর রক্ত প্রবাহকে কমিয়ে দেয়। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে তাইওয়ানের একটি জেনারেল হাসপাতালে ৭ বছর ধরে ১,০০,০০০ রোগীদের অনুসরণে কেবলমাত্র অর্ধেক নিয়মিত তাদের দাঁত পরিষ্কার করত। যারা এখনও কোনো চিকিৎসা নেয় নি তাদের তুলনায় যারা নিয়মিত দাতের যত্ন নিত তাদের ২৪% পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এবং ১৩% পর্যন্ত স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়। যদিও স্ট্রোকের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য ঝুঁকি বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ যেমন উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ধূমপান এবং ব্যায়াম এর অভাব কিন্তু এই গবেষণা এটিও প্রমান করে যে দাঁতের স্বাস্থ্যের সাথেও সামগ্রিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একটি নিয়মিত সহজ দাঁতের যত্ন আপনার জীবন বাঁচাতে পারে । তাই নিয়মিত দিনে দুবার ব্রাশ ও ফ্লস করতে হবে এবং প্রচুর পরিমানে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে । আর অবশ্যই ছয় মাস অন্তর অন্তর রেজিস্টার্ড ডেন্টিস্ট এর কাছে যাওয়ার কথা মনে রাখতে হবে।
আর রেজিস্টার্ড ডেন্টিস্ট চেনার এবং জানার একমাত্র উপায় হচ্ছে যে চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন বা নিবেন বলে মনস্থির করেছেন সেই চিকিৎসকের বি.ডি.এস ডিগ্রি দেখে তার কাছ থেকে সঠিক সেবা নেয়া।
বাংলাদেশের সাস্থ্য ব্যাবস্থাকে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে দন্ত চিকিৎসার প্রতি জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বি.ডি.এস ডিগ্রি ছাড়া যে কেউ দন্ত চিকিৎসক নয় এই জনসচেতনতাও বৃদ্ধির বিকল্প কোন উপায় নেই।