কৃষি শুমারি ২০১৮” শীর্ষক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
কামরুল হাসানঃ ২৫ নভেম্বর ২০১৮ খ্রি. তারিখ সকাল ১০:০০ টায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি ২০১৮ প্রকল্পের আওতায় প্রথম জোনাল অপারেশনে নিয়োজিত বিভাগীয়/জেলা শুমারি সমন্বয়কারীগণের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব জনাব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব মহোদয় বলেন, “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপদান করার লক্ষ্যে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” হিসেবে বিশ্বের দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন এবং “ভিশন-২০২১” কে Goal হিসেবে সামনে রেখে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। আপনারা জানেন, সরকারের অঙ্গীকার “রূপকল্প-২০২১” বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এর অধীন বিবিএস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে”।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও, গবেষণা সংস্থা, কৃষি বিষয়ক সংস্থাসমূহ প্রভৃতির পরিকল্পনা প্রণয়নের ও নীতি নির্ধারণের জন্য হালনাগাদ কৃষি বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এসংক্রান্ত পরিসংখ্যানের প্রস্তুত করার জন্য হালনাগাদ কৃষি বিষয়ক কাঠামো ও তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুতের পদক্ষেপ হিসেবে বিবিএস কর্তৃক “কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮” প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। অত্র প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা (SDGs), পরিসংখ্যান উন্নয়নে জাতীয় কৌশলপত্র (NSDS), পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা (FYP) এর সংশ্লিষ্ট ইন্ডিকেটরসমূহ মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণে সহায়তা করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি”। তিনি বলেন, কৃষি শুমারি বাস্তবায়নসহ বিবিএস এর মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমের সার্বিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি বিভাগ/জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ে গাড়ি সরবরাহ করা হয়েছে।
উক্ত গাড়ি ব্যবহার করে বিবিএস এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে শুমারি/জরিপ সংক্রান্ত কাজের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে ব্যাপক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বিবিএস এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বলে আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েন বলেন, কৃষি অবকাঠামোর বর্তমান চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি সরকার কর্তৃক কৃষি ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো “কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি ২০১৮ পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, কৃষি শুমারি ২০১৮ বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। এটি বিবিএস এর ব্যাপক কর্মকাণ্ড, পারস্পরিক সহযোগিতা ও কাজে নিষ্ঠা ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করা অসম্ভব। তিনি সবাইকে একযোগে কাজ করার উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কৃষি শুমারি ২০১৮ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত মাঠ পর্যায়ে জনবলের সমন্বয়ের কথা বলেন। তিনি সংশ্লিষ্ট জেলার উপপরিচালকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, অতি সত্ত্বর উপজেলা পর্যায়ে একেবারে জনবল নেই এমন তালিকা সরাসরি মহাপরিচালকের দপ্তরে আপনারা প্রেরণ করবেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) জনাব জাফর আহাম্মদ খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আগামী এপ্রিল/২০১৯ মাসে দেশব্যাপি কৃষি খানাসহ সকল খানার কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) অবকাঠামোর তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রথমে প্রস্তুতিমূলক জোনাল অপারেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জোনাল অপারেশনে দেশের সকল সাধারণ খানায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খানাসমূহের তালিকা তৈরি করে তালিকা অনুসারে নির্বাচিত খানাসমূহে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত শুমারিতে মৎস্য খাতের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি।
এ বছর এই প্রথম বারের মতো শুমারিতে মৎস্য খাতের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তা ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যও শুমারির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে যা সরকারের পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব বিকাশ কিশোর দাস এবং জনাব মোঃ আবুয়াল হোসেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর প্রতিনিধিসহ পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর হতে কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।