স্নোডেনকে আশ্রয় দিয়ে মার্কিন রোষে হংকং ছেড়ে কানাডায় নারী
আন্তজাতিক ডেস্কঃ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারির গোপন তথ্য ফাঁস করে তোপের মুখে পড়া এডওয়ার্ড স্নোডেনকে আশ্রয় দিয়ে চরম বিপদ ডেকে এনেছেন ভানেসা রডেল নামে হংকংয়ের এক নারী। আমেরিকা থেকে পালিয়ে আসা স্লোডেনকে আশ্রয় দেয়ার অপরাধে মার্কিন রোষে পড়ে নিজে এবার হংকং ছেড়ে নিয়েছেন কানাডায়। সপরিবারে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ৪২ বছর বয়সী ভানেসা রডেল হংকং নিবাসী নারী। ২০১৩ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তাড়া খেয়ে যখন আমেরিকা থেকে পালিয়ে যান স্নোডেন, সেসময় প্রথম আশ্রয় পেয়েছিলেই এই ভানেসার কাছেই। সঙ্গে ছিলেন ভানেসার কয়েকজন বন্ধুবান্ধব। তারপর থেকে মার্কিন গোয়েন্দাদের নজরে ছিলেন ভানেসা ও তার বন্ধুরা। ছোট মেয়ে কিয়ানাকে নিয়ে দিন কাটত আতঙ্কে।
ফিলিপিন্সের নাগরিক ভানেসা বুঝতে পারছিলেন, হংকং তার জন্য আর নিরাপদ নেই। বোঝামাত্রই নিরাপদ জায়গা খুঁজতে শুরু করেছিলেন। আবেদন করছিলেন বিভিন্ন দেশে। ততদিনে স্নোডেন রাশিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে শুরু করেছেন। তবে প্রথম আশ্রয়দাত্রীকে ভোলেননি।
জানুয়ারিতে কানাডায় শরণার্থীর পরিচয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করেন ভানেসা রডেল। এই কাজে তার পাশে ছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যারা উদ্বাস্তুদের নিয়ে কাজ করে। তাতেই রাস্তা অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ফিলিপিন্সের নাগরিক ভানেসাকে নিজেদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে কানাডা প্রশাসন। সোমবার হংকং থেকে বিমানে টরেন্টো পৌঁছান ভানেসা এবং মেয়ে কিয়ানা।
বিমানবন্দরে পা রেখেই ভানেসার প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘এবার আমি মুক্ত, নিরাপদ। মেয়েটাকে নিয়ে শান্তিতে জীবন কাটাব। কানাডা প্রশাসনের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
তার ছোট মেয়ে কিয়ানার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বলে কানাডার সরকারি সূত্রে খবর। যদিও প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবিষয়ে মুখ খোলেননি।
সম্প্রতি শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কানাডা প্রশাসন বেশ সহানভূতিশীল। মাস দুই আগে সৌদি আরবে পরিবারের অনুশাসন ভেঙে পালিয়ে আসা তরুণীকে আশ্রয় দিয়েছে কানাডা। এবার শরণার্থীর মর্যাদায় স্থায়ী আশ্রয় দেয়া হয় ফিলিপিন্সের বাসিন্দা ভানেসা রডেলকে।
আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের মত, জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এ ধরনের বিষয়ে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। কানাডার এমন ভূমিকা বিশ্বের দরবারে বেশ প্রশংসিত হয়েছে।