পপি দেখতে গেলেন, হাসলেন এটিএম শামসুজ্জামান
বিনোদন ডেস্কঃ অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান সুস্থ হয়ে উঠছেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেল গত মাসে রাজধানীর আজগর আলী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় দীর্ঘদিন।
এর মধ্যে বেশ কয়েক দফায় ছড়ানো হয় এই অভিনেতার মৃত্যু গুজব। সব গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে সবার দোয়ায় অবশেষে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। আজ তাকে দেখা গেল হাস্যোজ্জ্বল মুখে, নায়িকা পপির সঙ্গে।
চিত্রনায়িকা পপি রবিবার এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে যান। ফিরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, শ্রদ্ধেয় এটি এম শামসুজ্জামান শুধু ভালো একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন শিক্ষাগুরু, আমার গুরুজন, আমার বাবা, এছাড়াও আমার ভালোবাসার একজন প্রিয় মানুষ। তার হাসি আমার কাছে মূল্যবান সম্পদ। আমি অনেক লাকি তিনি বাবা হিসাবে সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। আর আমার সকল প্রাপ্তি ও ভালো কাজে খুশি হয়েছে এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। এজন্য আমি তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
এটিএম শামসুজ্জামানের পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা কামনা করেবলেন, ‘তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা তাকে এই অবস্থায় আর দেখতে চাই না, তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন।
গুণী এই অভিনেতার চিকিৎসায় পাশে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান পপি। তিনি বলেন, ‘আমার বাবার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি সবসময় শিল্পীদের ভালোবাসেন ও পাশে থাকেন। তার প্রতি অনেক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এটিএম শামসুজ্জামান। মল-মূত্র বন্ধ হয়ে যায়। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওইদিন রাত এগারোটার দিকে তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে। শনিবার দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টার অপারেশন শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এটিএম শামসুজ্জামানকে। এরপর অবস্থার আরো অবনতি হবে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে।
এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন পুরান ঢাকার দেবেন্দ্রেনাথ দাস লেনে। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর বিষকন্যা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে সিনেমায় পা রাখেন। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা। এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন।
অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনা আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’তে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রের অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।