সব

ট্রেনের রক্ষণ, নাকি ভক্ষণ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Wednesday 22nd May 2019at 12:56 pm
61 Views

আমারবাংলা ডেস্কঃট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের নামে যেন ‘টাকার গাছ’ লাগিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। রক্ষণাবেক্ষণের তবলা বাজিয়ে লুটে নেওয়া হচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য রেলের পশ্চিমাঞ্চলের খরচের হিসাবটা জানলে চোখ চড়কগাছ হবেই! তাহলে জানুন, বছরে খরচা কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকা। আর রক্ষণাবেক্ষণ, সেটা তো যেকোনো যাত্রী ট্রেনে উঠলেই টের পায়।

রাজশাহী থেকে ঢাকার পথে সকাল ৭টায় ছেড়ে আসে বিরতিহীন ট্রেন ‘বনলতা’। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় ছেড়ে যায় ‘সিল্কসিটি’। বিকেল ৪টায় ‘পদ্মা’, আর রাত ১১টা ২০ মিনিটে ছাড়ে ‘ধূমকেতু’। আন্ত নগর এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছার পর সাময়িক বিরতি নিয়ে ফের রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। নিয়ম অনুযায়ী এসব ট্রেনে কমপক্ষে পাঁচজন করে সুইপার নিয়োজিত থাকার কথা। যারা ট্রেনের ময়লা-আবর্জনা থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক টয়েলেটও পরিষ্কার করবে। ঢাকায় পৌঁছার পরই এ কাজগুলো করার কথা। অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী থেকে যেসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছে সেগুলোর বগি ঝাড়ু আর পানি ভরে নেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজই হয় না। ফলে ঢাকা থেকে যেসব যাত্রী রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, তারা আর ট্রেনের টয়লেটগুলো ব্যবহার করতে পারে না। আবার ট্রেনের কোনো কোনো সিটে ময়লা-আবর্জনা লেগে থাকে। কোনো কোনো বগিতে টয়লেটের কাদা-পানিও চলে আসে। বগিগুলোর সুইচ বা ফ্যানগুলোও ঠিকমতো চলে না। একমাত্র বিরতিহীন বনলতা ছাড়া বাকি সব পুরনো কোচের মোবাইল ফোনের চার্জারের সকেটগুলো ভেঙে গেছে।

এ ছবি শুধু রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী পথে চলাচলকারী আন্ত নগর ট্রেনের নয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সব আন্ত নগর ট্রেনেরই এ হাল দীর্ঘদিনের। অথচ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ও প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে এসব কাজের জন্য বছরে কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়।

রেলওয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, হাতে গোনা কয়েকজন ঠিকাদারকে দিয়ে নামমাত্র চুক্তি করে দুই-তিন বছর ধরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ট্রেনের বগির বিভিন্ন জিনিসপত্র রক্ষণাবেক্ষণ, পরিবর্তন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার এই কাজগুলো করানো হচ্ছে। এমনকি স্টেশনেরও বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করা হচ্ছে। বেশির ভাগ কাজই টেন্ডার ছাড়া প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার) ও প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা দপ্তরের আওতায় করা হয়। আর যত লুটপাট হয় এই দুটি দপ্তরেই।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলীর আওতায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এক বছরেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আর প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরের আওতায় কমপক্ষে ২০ কোটি টাকারও ওপরে কেনাকাটা বা বিভিন্ন কাজ করা হয়েছে। প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরের দেওয়া চাহিদাপত্র অনুযায়ী একেকটি কাঠের চেয়ারই কেনা হয়েছে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা করে। যা অতিরিক্ত হারে খরচ হয়েছে বলে খোদ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক দপ্তর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কেনাকাটা বা সংস্কারের নামে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ ও প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মৃণাল কান্তি বণিককেও সতর্ক করে দিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শহিদুল ইসলাম।

রাজশাহী


সর্বশেষ খবর