সব

পেটের দায়ে রিকশা চালাচ্ছে রুমানা!

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Wednesday 12th June 2019at 11:41 pm
FILED AS: ফোকাস
162 Views

 

এস এম শামীমঃ রাত তখন সারে ৯টা। পত্রিকার কাজ শেষ করে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলাম। রাজধানীর ফার্মগেট থেকে বসার দিকে মোর নিতেই চোখ পড়লো একটি রিকশার দিকে। প্রথমে বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও পরে তা সত্যিই হলো। হ্যা পাঠক, বলছিলাম রুমানা আক্তার নামের ১৮ বছর বয়সী জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী এক তরুণী রিকশা চালকের কথা।

ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের। প্রথমে দেখলাম রিকশার চালকের সিটে এক তরুণী ও যাত্রীর আসেন দুইজন পুরুষ, তারা রাজধানীর তেজকুনিপাড়া থেকে ফার্মগেট এসেছে এবং ভাড়াও দিয়েছে ২০ টাকা।

এদিকে আমি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতেই আবারও দেখলাম দুইজন মহিলা উঠলেন ঐ রিকশায়। এবার রিকশাটি আমার বাসার পথ ধরেই চলছে, আমিও চলছি রিকশার পেছনে। ১০ মি. পর রিকশাটি থামলো বিজয় স্বরণী ফ্লাইওভারের নিচে (তেজকুনিপাড়া)। যাত্রী নামিয়ে ভাড়া নিয়ে দাঁড়াতেই কথা হয় তার সাথে।

নাম রুমানা আক্তার, পিতা নুরু মিয়া। গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে হলেও ছোটবেলা থেকেই রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার রেলওয়ে বস্তিতে বসবাস করে রুমানা। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সে সবার বড়।

একজন মেয়ে হয়েও কেনো রিকশা চালায় জানতে চাইলে রুমানা বলে, লেখাপড়া করি নাই বলে কোথাও চাকরি করতে পারি না। আর তাই অন্য কোনো উপায় না থাকায় রিকশা চালাচ্ছি।

বাবা পরিবারের খরচ দেয় কি না জানতে চাইলে এই তরুণী জানায়- আব্বা গাজীপুর থাকে। ২-১ মাস পর পর এখানে আসে এবং ১ হাজার করে টাকা দিয়ে চলে যায়। আর মা’র কথা জানার চেষ্টা করলে রুমানা জানায়, আম্মা পাগল হয়ে গেছে। সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে।

এদিকে রিকশা চালিয়ে দৈনিক কতো টাকা রোজগার হয় জানতে চাইলে রুমানা বলে, আজকেই প্রথম রিকশা চালিয়েছি। বিকাল ৩টা থেকে এপর্যন্ত ৩শ’ টাকা হয়েছে। কাল কতো হবে জানি না। এখন বাসায় চলে যাবো। তাছাড়া আরো কিছু টাকা হতো, মেয়ে বলে অনেকে রিকশায় উঠতে চায় না। আজ যা কামাই হয়েছে, এখান থেকে রিকশার জমা দিয়ে যে টাকা থাকবে তা দিয়ে বাসার বাজার করবো। এখন যাইগা,,, বলে চলে যায় রুমানা।

এদিকে রুমানা ও তার পরিবারের বিষয়ে স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই আমাদের সামনে অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। যখন যে কাজ পেয়েছে, তাই করে নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে।

সত্যিই জীবন বড় অদ্ভুত। পেটের দায়ে জীবিকার তাগিদে নিজেকে অন্যায় পথে না নিয়ে রিকশা চালিয়ে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করছে রুমানা নামের মেয়েটি।

আমাদের দেশ ও সমাজে অনেক স্ব সহৃদয়বান ও বিত্তশালী মানুষ আছেন, আমরা কি পারি না রুমানাদের একটু সাহায্য করতে? খুব বেশি না, একটি রিকশা বা একটি চা’এর দোকান দেয়ার মতো পুঁজি হলেই মেয়েটিকে আর রিকশা চালাতে হতো না।

রুমানাকে কেউ সাহায্য বা সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
যোগাযোগ-
এস এম শামীম
সহঃবার্তা সম্পাদক, দৈনিক নতুন কাগজ।
মোবাইলঃ ০১৬২৭৬০৩৪০৬


সর্বশেষ খবর