সব

নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে-কেন্দ্রবিন্দুতে পুলিশ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Saturday 9th April 2016at 2:35 am
22 Views

16স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ ও পেশী শক্তি ব্যবহারের ধারা পাল্টে পুলিশ এখন কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “নির্বাচনে ভোটারদের পেছনে অবৈধ অর্থ খরচ করা হলে সেটা অল্প কিংবা বেশি পরিমাণে ভোটারদের পেছনে যেত; এরপর মাস্তানদের পেছনে টাকা খরচ করা হতো।

“আর এখন টাকা ঢালা হয় পুলিশের পেছনে। পুলিশই মাস্তানি করবে সেজন্য।”

পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিলুপ্ত স্থানীয় সরকার কমিশনের এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা তিনটি কালপর্বে এগিয়েছে। প্রথম পর্বে ১৯৭০-৮৯ সাল পর্যন্ত হয়েছে প্রতারণার নির্বাচন। দ্বিতীয় পর্বে ১৯৯০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থায়।

“২০১৪ সালের পর নির্বাচনী ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে যাওয়া শুরু হয়েছে। সর্বশেষ পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে দেখা গেল নির্বাচনী সিস্টেমই নেই।

“সত্তর সাল থেকে ‘ওয়ান পারসন ওয়ান ভোট’ এখন ‘নো পারসন অল ভোটস’।”

‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্থানীয় সরকারের ভবিষ্যৎ’ বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে আলোচনা সভার বক্তব্যে তার এসব মন্তব্য আসে।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারে শুধু মেয়র বা চেয়ারম্যানই সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, এ কারণে এই দুটি পদকে দলীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
“অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আমাদের সরকার চলে প্রধানমন্ত্রীর শাসনে আর স্থানীয় সরকার চলে রাষ্ট্রপতি শাসনে।”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে পুরো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তনের সুপারিশও আসে সভায়।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, “নীতিগত পরিবর্তনের জন্য আমরা অনেক কিছু করে রেখেছি, কিন্তু সেই দিকেতো রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো খেয়াল নেই।

“নির্বাচনী ব্যবস্থার এই অবস্থাকে তারা সঙ্কট মনে করছেন না। জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হিসাবে আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনকে ধরা হতো। আর এখন সেটাকে রাজনৈতিক দলের শক্তি হিসাবে ধরা হচ্ছে।”

ভোট এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে এর যে সম্পর্ক সেটা এখন আর আমরা দেখি না। এখন এটা একদিনের বিষয় হয়ে যাওয়ায় সেদিনের কারচুপি ও সহিংসতা নিয়েই পড়ে থাকি। যদিও ভোট রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিষয়, একদিনের বিষয় নয়।”

“ভোটারবিহীন-প্রার্থীবিহীন নির্বাচন, আইনবিহীন রাস্তা এবং খাদ্যে বিষের যে ধারা দেশে চলছে তার মধ্যে স্থানীয় সরকার তো একটা ডেড ইস্যু। স্থানীয় সরকার দীর্ঘজীবী হোক।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, “আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্যে এক ধরনের ‘বিল্ট-ইন’ সমস্যা আছে। সেটা থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় বের করতে হবে।

“ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হয়ে নির্বাচন কমিশন আউটসোর্সিংয়ের মতো কাজ করছে। জাতীয় নির্বাচনে যা হয়েছে, তার মতো সমস্যা এখানেও দেখা দিয়েছে।”

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু হাসান টিপু, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাংবাদিক আলতাফ পারভেজ এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ‘কোদাল’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া তিনজন প্রার্থী বক্তব্য দেন।


সর্বশেষ খবর