বিরামপুরে অসুস্থ্য শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
মোঃ সামিউল আলম, বিরামপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কাটলা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল চলাকালীন সময়ে দশম শ্রেণীর ছাত্র আজিম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকদের অবহেলার কারণে চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে তাঁর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার (১০ জুলাই) সকাল ১১ টায় বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় নিহত আজিমের সহপাঠি, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী শোক সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় ছাত্রনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি এক সময় দিনাজপুর জেলার মধ্যে সেরা বিদ্যাপীঠ ছিল। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা এখানে এসে লেখাপড়া করত। কিন্তু বিগত দশ বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ দেয়ায় বিদ্যালয়ের সুনাম ও ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে শিক্ষকদের চরম অবহেলার কারণে আমরা একজন মেধাবী ছাত্রকে হারালাম।
নিহত আজিমের সহপাঠীরা জানায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবহেলায় আমরা আমাদের একজন মেধাবী ও ক্রিকেট প্রেমিক বন্ধুকে হারিয়েছি। এই ঘটনায় মানবতাহীন দোষী শিক্ষকদেরকে শাস্তির আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানায় তারা।
মানববন্ধনে একাত্বতা গ্রহণ করে এতে অংশ নেন কাটলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আলী। তিনি বলেন, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেদের অবহেলায় আমরা আমাদের এক মেধাবি শিক্ষার্থীকে হারালাম। এর ন্যায্য বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। তিনি আগামী ২০ আগস্ট বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আবারো ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ মিছিল ও শোকসভার কর্মসূচী ঘোষণা দেন।
মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা একটি বিক্ষোভ র্যালি নিয়ে বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ আগস্ট সকালে উক্ত বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল আজিম মন্ডল ক্লাস শুরুর দিকে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাকে মটরসাইকেলে করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার জন্য ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট সহযোগিতা চাইলে কোন শিক্ষকই সহযোগিতা করতে রাজি হননি। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ভ্যান যোগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আব্দুল আজিম মন্ডলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এবং বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে ভাংচুর চালায় ও শিক্ষকদের ব্যবহৃত ৬টি মটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।