সন্ত্রাসী জিহাদীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে
প্রবাস ডেস্ক ঃ ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ভর্নারদিনুতে এক দম্পতির হামলা ও গুলিতে ১৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আয়োজিত নিহতের এক স্মরণ সভায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা। স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, ইসলাম কোন সন্ত্রাসী ঘটনা সমর্থন করে না। মুসলমান নামধারী কেউ কোন সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটালে তার জন্য মুসলিম কমিউনিটি দায়ী নয়। এজন্য কমিউনিটির সর্বস্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিশেষ করে সকল মসজিদের ইমাম ও আলেমদেরকে সকলকে সচেতন করে তুলতে ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় পঠিত খুৎবায় সন্ত্রাস বিরোধী বক্তব্য তুলে ধারার জন্য বক্তারা ইমামদের প্রতি ও আহ্বান জানান। সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ বাংলাদেশ প্লাজা’র কনফারেন্স কক্ষে ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সভায় উপরোক্ত আহ্বান জানানো হয়। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, মুজাহিদ আনসারী, আব্দুস শহীদ, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, জি এইচ আরজু, অধ্যাপিকা শাহনাজ মমতাজ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আব্দুল বাসির খান, বিএম জাকির, আব্দুর রহিম বাদশা, মিথুন আহমেদ, আব্দুল মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ক্যালিফোর্নিয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী যে সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে তার বিরুদ্ধে বিশ্বাবসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সন্ত্রাসী জিহাদীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বাংলাদেশী কমিউনিটির সকল সভায় ক্যালিফোর্নিয়ার ঘটনার নিন্দা জানানো এবং প্রতি সপ্তাহের জুম্মার নামাজের খুৎবায় সকল মসজিদের ইমামদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলে ধরার আহ্বান জানান।
কৌশিক আহমেদ বলেন, দেশে দেশে যেভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বাড়ছে তাতে প্রত্যেককে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সজাগ থেকে প্রতিবাদ করতে হবে, সবাইকে প্রতিবাদী হতে হবে। পৃথিবীর ৬০০ কোটি মানুষকেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে, শক্ত ‘ভয়েস রেইজ’ করতে হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীব্যাপী নানা কায়দায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘঠিত হচ্ছে। সন্ত্রানের কোন নিয়ম কানুন নেই। আইএস দিয়ে পৃথিবীকে অশান্ত করে তোলা হচ্ছে।
ড. প্রদীপ রঞ্জন কর তার বক্তব্যে ক্যালিফোর্নিয়া ঘটনার পর পরই নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাজি’ও জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিদর্শন এবং মুসলিম কমিউনিটির সাথে মতবিনিময় করায় মেয়রকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, পাকিস্তানীদের সাথে বাংলাদেশের ধর্মীয় কালচারে অনেক মিল থাকায় তাদের অপকর্মের জন্য আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি। তাই সকল বাংলাদেশীকে পাকিস্তানীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। মুজাহিদ আনসারী ক্ষোভের সাথে বলেন, প্যারিসের সন্ত্রাসী ঘটনার পর আমরা ইমাম-আলেম আর মসুল্লীদের সহযোগিতা পাইনি। ঐ সন্ত্রাসী ঘটনার প্রতিবাদে কোন মসজিদের সামনে কেউ দাঁড়ায়নি। তিনি বলেন, আইএস বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস রপ্তানী করছে। সন্ত্রাসীরা সভ্যতার শত্রু, অসভ্য, বর্বর। যেকোন মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে হবে।আব্দুস শহীদ বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হবে। এব্যাপারে মিডিয়াকেও অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। জি এইচ আরজু ইমাম আলেমদের সাথে কমিউনিটি লীডারদের মতবিনিময় সভা আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, তারা যদি মসজিদে মসজিদে খুৎবায় সন্ত্রাস বিরোধী বক্তব্য রাখেন তাহলে নতুন প্রজন্ম সন্ত্রাস বিরোধী ভূমিকায় অবদান রাখতে পারবে। সভার শেষ পর্যায়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় নিহতদের স্মরণে মোমবাতী প্রজ্জলন করা হয়। এসময় জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা ইসাফিল আলম এমপি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ উপস্থিত সকলে অংশ নেন।